এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৩ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
এক বছর আগে ভারতের প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়া ছিল স্বপ্নের চেয়ে দূরে, অথচ ২০২৫ সালে লোকেশ রাহুল হয়ে উঠেছেন ভারতীয় টেস্ট দলের অন্যতম শক্ত ভিত্তি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টেই শতরান করার মাধ্যমে ফের একবার ক্রিকেটপ্রেমীদের মন জয় করেছেন কর্ণাটকের এই ব্যাটার।
এক বছরের উল্টোফের
গত অক্টোবরে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীর কাছে রাহুলের ক্রিকেটজীবন প্রশ্নবিদ্ধ মনে হচ্ছিল। সাদা বলের কিংবা লাল বলের ক্রিকেট— কোনও ইনিংসে ধারাবাহিকতা দেখাতে পারছিলেন না তিনি। টেস্ট ও ওয়ানডে—দুই দলের প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়ার পর প্রশ্ন উঠেছিল, আইপিএল অধিনায়ক হিসাবে লখনউ সুপার জায়ান্টের ভবিষ্যত কী হবে। ফর্ম হারানো, দলের সঙ্গে দূরত্ব—সব মিলিয়ে চ্যালেঞ্জ অনেক।
অভিজ্ঞতার শক্তি
অথচ বছর ঘুরতেই বদলে গেছে গল্প। বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা না থাকলেও রাহুলই হয়ে উঠেছেন দলে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার। নেতৃত্বের দায়িত্ব নেননি, খেলেছেন সাধারণ ক্রিকেটার হিসাবে, তবে নিজের ব্যাটিং ও ফিটনেসের ওপর কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সেই প্রচেষ্টা ফল দিয়েছে—রানে ফেরার স্বাক্ষর মিলেছে। ওপেনিং থেকে মিডল অর্ডার, ব্যাটিং অর্ডারের যে কোনও স্থানে পারদর্শিতা দেখাতে সক্ষম রাহুল। উইকেটরক্ষক হিসাবেও দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন।
দেশের মাটিতে ৩২১১ দিন পর শতরান
শুক্রবার রাহুল টেস্টে নিজের ১১তম শতরান করেন। এটি দেশের মাটিতে তাঁর দ্বিতীয় টেস্ট শতরান। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট শতরান করেছিলেন, তখন ১৯৯ রান করেছিলেন। এরপর দীর্ঘ ৮ বছর ৯ মাস, অর্থাৎ ৩২১১ দিন পর দেশের মাটিতে আবারও শতরান। শুধু তাই নয়, শেষ ছয়টি টেস্টে এটি তাঁর তৃতীয় শতরান।
নতুন অধ্যায়, নতুন আত্মবিশ্বাস
ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টে ৫৩২ রান এবং ৫৩.২০ গড়ে পারফরম্যান্স দেখানো রাহুলের ফর্ম ফেরার প্রমাণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ইনিংসেই শতরান করে তিনি দলকে ভরসা দিয়েছেন। রোহিত শর্মার অবসরের পর ওপেনিং নিয়ে শুভমন গিলদের চিন্তা দূর করেছেন এবং দলের অভিজ্ঞতাও আরও সমৃদ্ধ করেছেন। এক বছর আগের অনিশ্চয়তা আজ উজ্জ্বল আত্মবিশ্বাসে রূপ নিয়েছে।
লোকেশ রাহুলের এই ফিরে আসা শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য নতুন উদ্দীপনা। যে ব্যাটার একসময় দলের বাইরে, আজ দেশের মাটিতে শতরান করে দলকে শক্তিশালী করছেন, সেটিই রাহুলের নতুন অধ্যায়ের সবচেয়ে বড় গল্প।