ঢাকা, সোমবার, অক্টোবর ৬, ২০২৫ | ২১ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেনা মোতায়েন সিদ্ধান্ত ঘিরে নতুন বিতর্ক।


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেনা মোতায়েন সিদ্ধান্ত ঘিরে নতুন বিতর্ক।

ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে ফেডারেল সম্পদ রক্ষার নামে ক্যালিফোর্নিয়া ন্যাশনাল গার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ওরেগন রাজ্য আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে।

রবিবার ওরেগনের অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যান রেফিল্ড জানান, একজন বিচারক ওরেগন ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করার পর রাজ্য সরকার এখন ক্যালিফোর্নিয়া গার্ড পাঠানোর বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

“ওরেগন গার্ড পাঠানো যেমন বেআইনি ছিল, ক্যালিফোর্নিয়া গার্ড পাঠানোও তেমনি। এটি রাষ্ট্রপতির জন্য কোনো ছোটখাটো প্রক্রিয়াগত বিষয় নয়।”

রাজ্য ফেডারেল আদালতে অভিযোগ সংশোধন করে দ্বিতীয় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে বলে তিনি জানান।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র অ্যাবিগেল জ্যাকসন এক বিবৃতিতে বলেছেন,

“সহিংস দাঙ্গা ও ফেডারেল কর্মীদের ওপর হামলার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার আইনগত কর্তৃত্ব প্রয়োগ করেছেন।”

তবে, ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক বলেন, ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রায় ১০০ জন সৈন্য ইতিমধ্যেই ওরেগনে পৌঁছেছে, এবং আরও অনেকে আসছেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল রয়টার্সকে জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার প্রায় ২০০ ফেডারেল সৈন্যকে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে পোর্টল্যান্ডে পাঠানো হচ্ছে, ইমিগ্রেশন, কাস্টমস এবং অন্যান্য ফেডারেল দায়িত্বে সহায়তার জন্য।

শনিবার মার্কিন জেলা বিচারক কারিন ইমারগুট ট্রাম্পকে পোর্টল্যান্ডে ওরেগন ন্যাশনাল গার্ড পাঠানো থেকে অস্থায়ীভাবে বিরত রাখার আদেশ দেন।
রায়ে বলা হয়, ট্রাম্প “তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করেছেন” এবং দশম সংশোধনী লঙ্ঘন করেছেন।

গভর্নর কোটেক বলেন, ট্রাম্পের নতুন পদক্ষেপ “বিচারকের রায়কে পাশ কাটানোর চেষ্টা”, যা প্রশাসন আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

“ওরেগনে সামরিক হস্তক্ষেপের কোনো প্রয়োজন নেই। এখানে কোনো বিদ্রোহ নেই, জাতীয় নিরাপত্তার হুমকিও নেই। এটি আমাদের বাড়ি, যুদ্ধক্ষেত্র নয়।”

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প শিকাগো ও পোর্টল্যান্ডের মতো ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন শহরে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন,
যুক্তি দিয়েছেন যে “সহিংস বিক্ষোভের” মধ্যে ফেডারেল কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য এটি প্রয়োজন।

কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকরা বলছেন,
“আমরা ফেডারেল সাহায্য চাই না, দরকারও নেই।”

গভর্নর গ্যাভিন নিউজম জানিয়েছেন, তিনি এই সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
তার ভাষায়,

“এটি আইন ও ক্ষমতার ভয়াবহ অপব্যবহার।”
হোয়াইট হাউস আবারও প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেছে,
“ট্রাম্প কেবল ফেডারেল সম্পদ ও কর্মীদের রক্ষা করছেন।”

“গ্যাভিন নিউজমের উচিত সহিংস অপরাধীদের বদলে আইন মেনে চলা নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানো।”

বিচারক ইমারগুট বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন যে “বিদ্রোহের আশঙ্কা”র কথা বলছে,
তা বাস্তবে প্রমাণিত নয়।

“পোর্টল্যান্ডে আইসিই অফিসের সামনে সংঘর্ষগুলো কোনোভাবেই এমন নয় যা নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সামলাতে পারে না।”

বিচারক আরও সতর্ক করেন, ফেডারেল ও সামরিক ক্ষমতার সীমা মুছে ফেললে
“দেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।”

গত মাসে এক ফেডারেল বিচারক লস অ্যাঞ্জেলেসে বিক্ষোভ দমন করতে ফেডারেল সেনা ব্যবহারের ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনকে দায়ী করেছিলেন।
তখনও আদালত বলেছিল, এটি “আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন”।

ইমারগুট বলেন, পোর্টল্যান্ডের পরিস্থিতি লস অ্যাঞ্জেলেসের মতো নয়,
এবং এখানে “বিদ্রোহ বা সহিংসতা”র কোনো যথেষ্ট প্রমাণ নেই।