ঢাকা, মঙ্গলবার, অক্টোবর ৭, ২০২৫ | ২২ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

গ্রেটা থুনবার্গকে ‘পাগল’ বললেন ট্রাম্প! ডাক্তার দেখানোর পরামর্শে চরম বিতর্ক


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম

গ্রেটা থুনবার্গকে ‘পাগল’ বললেন ট্রাম্প! ডাক্তার দেখানোর পরামর্শে চরম বিতর্ক

সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গকে নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গাজামুখী ত্রাণ বহরের সঙ্গে যাত্রা করে ইসরায়েলের হাতে গ্রেপ্তার এবং পরে বিতাড়িত হওয়ার ঘটনায় ট্রাম্প এবার থুনবার্গকে ‘ঝামেলাবাজ’ আখ্যা দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, তিনি বলেন— থুনবার্গের “রাগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা আছে” এবং “তার একজন মানসিক চিকিৎসকের দরকার।”

‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামে একটি ত্রাণ বহরে ৪০টিরও বেশি নৌযান নিয়ে গাজা উপকূলে যাচ্ছিলেন থুনবার্গসহ শতাধিক অধিকারকর্মী। গত বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে ইসরায়েলি নৌবাহিনী ৪৭৯ জনকে আটক করে। তাদের মধ্যে সোমবার গ্রেটা থুনবার্গসহ ১৭১ জনকে গ্রিস ও স্লোভাকিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়।

সোমবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে থুনবার্গ ও অন্যান্য অধিকারকর্মীদের নির্বাসন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। জবাবে ট্রাম্প বিদ্রূপ করে বলেন,
“সে (থুনবার্গ) কেবল একজন ঝামেলাবাজ। আগে পরিবেশ আন্দোলনে ছিল, এখন অন্যদিকে ঢুকে পড়েছে। ওর স্পষ্ট রাগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা আছে। আমার মনে হয়, ওর একজন মানসিক ডাক্তার দেখানো দরকার।”

সাংবাদিকদের সঙ্গে হাস্যরসের ভঙ্গিতে ট্রাম্প আরও যোগ করেন, “আপনারা কি কখনও তাকে দেখেছেন? সে তরুণী, কিন্তু খুবই রাগী। পাগলাটে। সে শুধু সমস্যা তৈরি করতেই জানে।”

উল্লেখ্য, ট্রাম্প ও থুনবার্গের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ২০১৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হওয়ার পরও ট্রাম্প তাকে কটাক্ষ করেছিলেন। সেই সময় ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, “গ্রেটাকে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেওয়া উচিত, একটু ঠান্ডা হওয়া দরকার।”

এদিকে, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সোমবার গ্রিসে পৌঁছেছেন থুনবার্গ। তার আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, বন্দি অবস্থায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে নির্যাতন করেছে এবং জোর করে ইসরায়েলের পতাকায় চুমু খাওয়ানো হয়েছে।

এথেন্সের এলিফথেরিওস ভেনিজেলোস বিমানবন্দরে পৌঁছে থুনবার্গ এক আবেগঘন বক্তব্য দেন। তিনি বলেন,
“আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা মুখ্য নয়। কারাগারে আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হয়েছে, সেটা বড় বিষয় নয়। আসল গল্প হলো— আমাদের চোখের সামনে গাজায় চলছে এক লাইভ-স্ট্রিমড গণহত্যা।”

থুনবার্গ আরও বলেন, “আজ কেউ বলতে পারবে না, তারা জানত না গাজায় কী ঘটছে। ভবিষ্যতেও কেউ এই অজুহাত দিতে পারবে না— ‘আমরা জানতাম না।’”

ইসরায়েলকে সরাসরি অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, “তারা পুরো একটি জাতিকে ধ্বংস করতে চায়। গাজায় মানবিক সহায়তা আটকে রেখে তারা আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখা হচ্ছে— যারা বছরের পর বছর অবরোধ ও নিপীড়নের মধ্যে বেঁচে আছে।”

তার এই বক্তব্য ঘিরে বিশ্বজুড়ে সমর্থকরা আবারও সোচ্চার হয়েছেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের কটাক্ষে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে।