ঢাকা, বুধবার, অক্টোবর ৮, ২০২৫ | ২২ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে চীনা প্রযুক্তির ক্ষমতা দেখে মুগ্ধ পাকিস্তান, জাহির করলেন অস্ত্র ব্যবহারের প্রশংসা


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৭ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম

ভারতের সঙ্গে সংঘাতে চীনা প্রযুক্তির ক্ষমতা দেখে মুগ্ধ পাকিস্তান, জাহির করলেন অস্ত্র ব্যবহারের প্রশংসা

পাকিস্তানের আইএসপিআর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ভারতের সঙ্গে মে মাসে সংঘাতকালে ব্যবহৃত চীনা তৈরি অস্ত্রব্যবস্থার পারফরম্যান্স নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই চীনা প্ল্যাটফর্মগুলো অসাধারণভাবে কার্যকর ছিল। তথ্যটি পাকিস্তানি গণমাধ্যম দ্য নিউজ ব্লুমবার্গ প্রকাশ করেছে।

ইসলামাবাদ থেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল চৌধুরী বলেন, “নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, সাম্প্রতিক চীনা সামরিক প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের সক্ষমতা অসাধারণভাবে প্রদর্শন করেছে। আমরা সব ধরনের প্রযুক্তির প্রতি উন্মুক্ত।”

গত মে মাসে চারদিনব্যাপী সংঘাতের সময় পাকিস্তান প্রথমবারের মতো আধুনিক চীনা অস্ত্রব্যবস্থা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে। এর মধ্যে ছিল জে-১০সি যুদ্ধবিমান, যার মাধ্যমে পাকিস্তান দাবি করে একাধিক ভারতীয় যুদ্ধবিমান—এর মধ্যে ফরাসি তৈরি রাফালও রয়েছে—ভূপাতিত হয়েছে। সংঘাতের পর থেকেই এসব অস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হয়।

ডিজি আইএসপিআর জানিয়েছেন, পাকিস্তান এখন পর্যন্ত সাতটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করার প্রমাণ দিয়েছে। এর আগে সংখ্যা ছিল ছয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সম্প্রতি এক সমাবেশে বলেন, “ওরা সাতটি বিমান নামিয়েছে,” যদিও কোন পক্ষের কথা তিনি স্পষ্ট করেননি।

অন্যদিকে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সরাসরি মন্তব্য না করে বিমানবাহিনীর প্রধানের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ভারতের দাবি, সংঘাতে তারা প্রায় এক ডজন পাকিস্তানি বিমান ধ্বংস করেছে।

জেনারেল চৌধুরী বলেন, “পাকিস্তানের কোনো বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আমরা কখনোই তথ্য-উপাত্ত নিয়ে খেলিনি।”

চলতি বছরের আগস্টে পাকিস্তান ঘোষণা দেয়, তাদের অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত হয়েছে জে-১০এমই আক্রমণ হেলিকপ্টার, যা চীনের সীমান্ত পাহারায় ব্যবহৃত মডেলের অনুরূপ।

গত মাসে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি চীনের চেংদু শহরে যান এবং জে-১০ যুদ্ধবিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

চীনা অস্ত্র ব্যবহার ভবিষ্যতেও অগ্রাধিকার পাবে কিনা—এই প্রশ্নে আইএসপিআর প্রধান বলেন, পাকিস্তান চীন ও পশ্চিমা উভয় উৎস থেকে সরঞ্জাম ক্রয় করে। “আমাদের কৌশল সবসময় কার্যকর, দক্ষ ও অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী প্রযুক্তি গ্রহণ করা,” তিনি বলেন। তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান কোনো অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নেই। “প্রতিবেশী ভারতের তুলনায় আমাদের প্রতিরক্ষা বাজেট খুবই অল্প। আমাদের হাতে সীমাহীন অর্থের বিলাসিতা নেই।”

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি)–এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যয় ছিল ১০.২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ভারতের ব্যয় ৮৬.১ বিলিয়ন ডলার। তবে জিডিপির অনুপাতে দু’দেশের প্রতিরক্ষা ব্যয় প্রায় সমান—পাকিস্তানের ২.৭ শতাংশ, ভারতের ২.৩ শতাংশ।