ঢাকা, বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯, ২০২৫ | ২৪ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

বাগরাম ঘাঁটি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব: আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে চমকে দিল ভারত


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম

বাগরাম ঘাঁটি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বন্দ্ব: আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে চমকে দিল ভারত

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের একবার আন্তর্জাতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি আবারও যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিতে হবে। তবে তার এই চাপের কূটনৈতিকভাবে কড়া জবাব দিয়েছে ভারত। শুধু ভারতই নয়, ট্রাম্পের দাবির বিরোধিতা করে চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়াও আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই চার দেশের একসঙ্গে এমন অবস্থানকে “বিরল কূটনৈতিক ঐক্য” হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের এই সমর্থন এসেছে এমন সময়ে, যখন আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সরকারি সফরে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। জাতিসংঘের অনুমোদনে তিনি ৯ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত সফরে থাকবেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর এটাই হবে কোনো আফগান মন্ত্রীর প্রথম ভারত সফর, যদিও ভারত এখনো তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

গত মঙ্গলবার মস্কোতে অনুষ্ঠিত ‘মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশন’-এর সপ্তম বৈঠকে ভারত, চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়া যৌথভাবে আফগানিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়। বৈঠক শেষে দেওয়া বিবৃতিতে সরাসরি বাগরামের নাম উল্লেখ না করলেও জানানো হয়,

“আফগানিস্তান বা তার প্রতিবেশী দেশে নতুন কোনো সামরিক অবকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর।”

এর আগে হঠাৎ করেই ট্রাম্প বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত চাওয়ার দাবি তোলেন। অথচ পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করে নেয় এবং সে সময়ই দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের নতুন দাবি আন্তর্জাতিক মহলকে বিস্মিত করেছে। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার সঙ্গে সঙ্গে সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, দেশের সার্বভৌমত্ব কোনো অবস্থাতেই অন্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে না।

আফগান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন,

“আফগানরা কখনোই তাদের জমি কারও হাতে হস্তান্তর করবে না।”

এই অবস্থার মধ্যেই আফগান প্রতিনিধি দল প্রথমবারের মতো মস্কো বৈঠকে অংশ নেয়, যেখানে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি উপেক্ষা করেছে আফগানিস্তান, তবু ট্রাম্প তার চাপ বজায় রেখেছেন। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন আঞ্চলিক কূটনীতিতে তাৎপর্যপূর্ণ মোড় এনেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ভারত এখন আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করছে। দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নয়াদিল্লির এই অবস্থানকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।