এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
দক্ষিণ সুদানে একটি ‘ত্রিভুজ প্রেম’-কে কেন্দ্র করে সংঘটিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ১৪ সেনা নিহত হয়েছেন। এতে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ সুদান ও সুদানের সীমান্তবর্তী তেলসমৃদ্ধ আবিয়েই বক্স অঞ্চলের কাছের একটি বাজারে সোমবার এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সরকারপন্থি ও বিরোধী যোদ্ধাদের মিলিত ইউনিফায়েড ভিআইপি প্রোটেকশন ফোর্সের সদস্যরা।
দেশটির প্রেসিডেন্ট সালভা কিয়ি ও তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়েক মাচারের মধ্যে ক্ষমতা-বণ্টন চুক্তি কয়েক মাস ধরেই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থার কারণে দেশ আবারও গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে।
গত মাসে মাচারের বিরুদ্ধে খুন, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়। তাকে ঐক্য সরকারের প্রথম উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করেছে।
দক্ষিণ সুদান পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (এসএসপিডিএফ) মুখপাত্র লুল রুয়াই কোয়াং জানিয়েছেন, দুই কর্মকর্তা—একজন মাচারপন্থি, একজন কিয়িরপন্থি—সোমবারের সংঘর্ষ শুরু করেছেন।
কোয়াং বলেন,
“সংঘর্ষের কারণ নিয়ে দুটি ব্যাখ্যা রয়েছে। একটি হলো ব্যক্তিগত ভুল বোঝাবুঝি, আর অন্যটি হলো ‘ত্রিভুজ প্রেমের’ ফল। দুই কর্মকর্তাই একই নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।”
কোয়াং আরও জানান, মাচারপন্থি কর্মকর্তা গুলি চালালে তার কিয়িরপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বী নিহত হন, যা উত্তেজনা সৃষ্টি করে। উভয় পক্ষের দেহরক্ষীরা পাল্টা গুলি চালালে সংঘর্ষ বাজার থেকে চেকপোস্ট ও সেনা ব্যারাকে ছড়িয়ে পড়ে।
ফলস্বরূপ, মোট ১৪ সেনা নিহত হয়েছেন—এর মধ্যে ৬ জন এসপিএলএ-আইও (মাচারের দল) এবং ৮ জন এসএসপিডিএফের। একজন বেসামরিক নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, যদিও তার অবস্থা এখনো নিশ্চিত নয়। আহত পাঁচ সেনাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কোয়াং জানিয়েছেন, এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়, তবে তদন্ত শুরু হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছেন, দক্ষিণ সুদান আবারও যুদ্ধের প্রান্তে দাঁড়িয়েছে। শুধু এ বছরই সেখানে প্রায় দুই হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ সুদান ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভ করে, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে দেশটি পাঁচ বছরব্যাপী গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৮ সালের এক শান্তিচুক্তি সেই যুদ্ধ শেষ করে, তবে এরপরও দেশটির নেতারা নির্বাচন আয়োজন ও সশস্ত্র বাহিনী একীভূত করতে ব্যর্থ হয়েছেন।