এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাল ফাইন্যান্স, খাদ্য ও পানীয় শিল্প, নির্মাণ এবং জ্বালানি—এই পাঁচ খাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সৌদি বিনিয়োগকারীরা। তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট ২০২৫’ এর সমাপনী অনুষ্ঠানের পরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএবিসিসিআই)। দুই দেশের মধ্যে ৫৩ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ইতিহাসে ঢাকায় প্রথমবারের মতো এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৮ অক্টোবর) হোটেল সোনারগাঁ-য়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআই সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশ এখন শুধু তৈরি পোশাক শিল্পে নয়, সফটওয়্যার, তথ্যপ্রযুক্তি ও ফ্রিল্যান্সিংয়ে বিশ্বে উল্লেখযোগ্য অবস্থান তৈরি করেছে। সৌদি উদ্যোক্তারা এই সম্ভাবনার অংশীদার হতে চান।”
তিনি আরও জানান, দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে শিগগিরই সৌদি আরবে ‘শো কেস বাংলাদেশ’ আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো সরাসরি সৌদি বিনিয়োগকারীদের সামনে উপস্থাপন করা হবে।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া সৌদি আরবের আল-তাইয়্যিবাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞ ড. খালিদ আল হারবি সফরে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সৌদি আরবের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা ও উদ্ভাবনী নীতিকে কাজে লাগিয়ে উভয় দেশের উৎপাদনশীল খাতে অবদান রাখতে আগ্রহী।”
ড. আল হারবি বলেন, “সৌদি আরবের স্বাস্থ্যসেবা খাতে, বিশেষ করে নার্সিং সেবার জন্য বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। বাংলাদেশি নাগরিকদের অবদানের জন্য সৌদি ব্যবসায়ীরা কৃতজ্ঞ।”
সামিটে অংশ নেওয়া হ্যালিওপার্কের সিইও মাইকেল স্যাসেন বলেন, “বাংলাদেশ শুধু তৈরি পোশাক শিল্পে এগিয়ে নেই, সফটওয়্যার ও সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রেও বিশ্বমানের কাজ করছে। দেশের তরুণ জনগোষ্ঠী খুবই কর্মদক্ষ ও আগ্রহী, যা অর্থনীতির জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছে।”
অন্যান্য ব্যবসায়ীরা উল্লেখ করেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন, যৌথ বিনিয়োগ ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই শ্রমশক্তিকে আরও দক্ষ করা সম্ভব।
এসময় সৌদি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য, পানীয় ও কৃষিপণ্যে বিনিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হালাল ও কৃষিপণ্য আমদানি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিন দিনব্যাপী সামিটে দুই দেশের শীর্ষ নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও পলিসিমেকাররা অংশ নেন। আয়োজনের মধ্যে ছিল একাধিক থিম্যাটিক সেশন, যেখানে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, রেমিটেন্স ও প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআই পরিচালক ও প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক উজমা চৌধুরী, সংগঠনের সহ-সভাপতি আহমেদ ইউসুফ ওয়ালিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।