এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর যেন নতুন এক ভূরাজনৈতিক মোড় নিয়েছে দক্ষিণ এশিয়া। যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে পাকিস্তান এখন পেয়ে যাচ্ছে একের পর এক শক্তিশালী মিত্র। সম্প্রতি সৌদি আরবের সঙ্গে ‘স্ট্র্যাটেজিক মিউচুয়াল ডিফেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক চুক্তি করেছে ইসলামাবাদ। আর এবার কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক শক্তির দেশ তুরস্ক।
এখন কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের প্রতিপক্ষ শুধুই পাকিস্তান নয়—তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে তুরস্ক, আজারবাইজান এবং সামরিক ক্ষমতায় বিশ্বের তৃতীয় শক্তিশালী দেশ চীন। গত কয়েক বছরে তুরস্ক ও আজারবাইজান ভারতবিরোধী অবস্থান আরও প্রকাশ্য করেছে, যা এখন রূপ নিয়েছে একটি অনানুষ্ঠানিক ত্রিশক্তি জোটে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই জোটের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন সরকার। বিশেষ করে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর কূটনৈতিক সম্পর্ক ছাড়িয়ে এখন এই মিত্রতার বন্ধন পৌঁছে গেছে সামরিক সহযোগিতায়।
সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে তুরস্ক। দেশটি পাকিস্তানকে নিয়মিতভাবে অত্যাধুনিক বায়রাক্তার টিবি-২ ড্রোন সরবরাহ করছে, যা আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত। পাশাপাশি ইসলামাবাদের নৌবাহিনীকে শক্তিশালী করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত যৌথ সামরিক মহড়া হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের ধারণা, পাকিস্তান-তুরস্ক জোটের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে চীন। দেশটি পাকিস্তানকে দিচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের স্টেলথ যুদ্ধবিমান, আধুনিক ট্যাংক, কামান ও রণতরীসহ নানা সামরিক সরঞ্জাম। শুধু তাই নয়, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও স্যাটেলাইট নজরদারিতেও সহায়তা করছে বেইজিং।
এই চার দেশের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতায় ভারতের ওপর বাড়ছে কৌশলগত চাপ। বিশেষ করে পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সাম্প্রতিক SMDA চুক্তি নয়াদিল্লির উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।
তবে ভারতও পিছিয়ে নেই। পাল্টা জোট তৈরিতে এখন গ্রিস, সাইপ্রাস, আর্মেনিয়া ও ইসরায়েলকে পাশে পাচ্ছে মোদি সরকার। এই দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্ক, আজারবাইজান ও পাকিস্তানের পুরনো দ্বন্দ্ব রয়েছে।
তবে প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান-তুরস্ক-আজারবাইজান-চীন জোটের প্রযুক্তি, সামরিক সমন্বয় ও ভূরাজনৈতিক অবস্থান ভারতের জন্য এখন এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে—যা আগামী বছরগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ভারসাম্য নতুনভাবে গঠন করতে পারে।