ঢাকা, শুক্রবার, অক্টোবর ১০, ২০২৫ | ২৫ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

গাজায় ২০০ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেল


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১০ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

গাজায় ২০০ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন, হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেল

তেল আবিবের জিম্মি স্কোয়ার জুড়ে আনন্দের উচ্ছ্বাস। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজায় হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির ঐতিহাসিক চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরাইলের মন্ত্রিসভা।

চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় সব সামরিক কার্যক্রম স্থগিত হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র উপত্যকায় ২০০ সৈন্য মোতায়েন করবে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।

মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, “সরকার সকল জীবিত ও মৃত জিম্মিকে মুক্ত করার রূপরেখা অনুমোদন করেছে।” দুই বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। হামাসের প্রধান খলিল আল-হাইয়া জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর কাছ থেকে যুদ্ধের সমাপ্তির নিশ্চয়তা পেয়েছেন।

চুক্তির ফলে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী বহনকারী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ করবে। দুই বছরের সংঘাতের পর উপত্যকায় লাখ লাখ বেসামরিক মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছে।

তবে চুক্তি কার্যকর হওয়ার আগে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। মুক্তি পেতে যাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দীদের চূড়ান্ত তালিকা এখনও ঠিক হয়নি। হামাস ইঙ্গিত দিয়েছে, জীবিতদের তুলনায় মৃতদেহ পুনরুদ্ধারে সময় বেশি লাগবে। এছাড়া, যুদ্ধ শেষে গাজার পুনর্গঠন ও হামাসের ভবিষ্যত সংক্রান্ত আলোচনা এখনও চলমান।

নেতানিয়াহু সরকারের ভিতরে ডানপন্থী নিরাপত্তা মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “হামাসকে পুরোপুরি নির্মূল না করলে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ভোট দেব।”

তবে উচ্ছ্বাস এবং আশা প্রকাশ করছে গাজার মানুষ। খান ইউনিসের বাসিন্দা আব্দুল মাজিদ আবদ রাব্বো বলেন, “আল্লাহর শুকরিয়া, এই যুদ্ধবিরতির জন্য। রক্তপাত ও হত্যার অবসান হয়েছে। পুরো গাজা খুশি।”

জিম্মিদের পরিবারের সদস্যরাও আনন্দিত। ছেলে মাতানকে হারানো এইনাভ জাউগাউকা বলেন, “আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না, কী অনুভব করছি তা ব্যাখ্যা করতে পারছি না। এটি অবিশ্বাস্য।”

যুদ্ধবিরতির আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার আগে বৃহস্পতিবারও কিছু ইসরাইলি হামলা হয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুই পৃথক হামলায় সাতজন নিহত হয়েছেন।

রোববার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিশরীয় স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ইসরাইলি নেসেটের (পার্লামেন্ট) স্পিকার আমির ওহানা ট্রাম্পকে ভাষণ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা ২০০৮ সালের পর প্রথম।

চুক্তি আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন পেয়েছে। গাজায় লড়াই বন্ধ হওয়ার পর আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন ও পুনর্গঠন সহায়তা নিয়ে প্যারিসে বৈঠক হয়েছে। যৌথ টাস্কফোর্সে যুক্তরাষ্ট্র ২০০ সৈন্য পাঠাবে, তবে গাজার ভিতরে কোনো আমেরিকান সেনা থাকবে না। টাস্কফোর্সে মিশর, কাতার, তুরস্ক এবং সম্ভাব্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধি থাকবেন।