এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করার পরই তিনি এই কঠোর পদক্ষেপের কথা জানালেন।
প্রতিবেদনে জানা যায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ট্রাম্প তার নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ একটি পোস্টে ঘোষণা করেন যে, আগামী মাস থেকে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর এই অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।
সফটওয়্যার রপ্তানিতেও রাশ টানছে আমেরিকা
পোস্টে ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, শুধু শুল্ক আরোপই নয়, যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারের রপ্তানিতেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।
ট্রাম্পের এই বিস্ফোরক সিদ্ধান্তের জেরে দুই পরাশক্তির মধ্যে আবারো বাণিজ্য যুদ্ধ পুরোদমে শুরু হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ট্রাম্প সরকারের এই নতুন পদক্ষেপটি ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে। মনে রাখতে হবে, বর্তমানে চীনা পণ্যের ওপর যে শুল্ক ধার্য করা আছে, তার ওপর আরও ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। অর্থাৎ, সবমিলিয়ে চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মোট শুল্কের হার এখন ১৪০ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
বিরল খনিজ নিয়ে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প: 'বিশ্বকে বন্দি করার চেষ্টা'
এর আগে শুক্রবার সকালে অন্য এক পোস্টে ট্রাম্প চীনের বিরল খনিজ রপ্তানির ওপর নতুন নিয়ম জারি করাকে 'বিশ্বকে বন্দি করার চেষ্টা' হিসেবে অভিহিত করেন এবং বেইজিংকে 'অত্যন্ত শত্রুতাপূর্ণ' বলেও মন্তব্য করেন।
এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক থেকে সরে আসতে পারেন। যদিও পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বৈঠক বাতিল করা হয়নি, তবে 'বৈঠক হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়'। তবে তিনি শেষপর্যন্ত যোগ করেন, “আমি যাই হোক সেখানে থাকব।”
সংকটে মার্কিন শিল্প: উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়েছিল ফোর্ডকে
গাড়ি, স্মার্টফোন এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্য তৈরিতে বিরল খনিজ অন্যতম অপরিহার্য উপাদান। বিশ্বজুড়ে এই উপাদান উৎপাদনে চীনের একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে। চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্প যখন চীনের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দেন, তখন বেইজিং প্রতিশোধ হিসেবে তাদের বিরল খনিজ রপ্তানিতে কঠোরতা আরোপ করে। যেসব মার্কিন সংস্থা এই পণ্যের ওপর নির্ভরশীল, তারা তখন চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে। এমনকি গাড়ি নির্মাতা ফোর্ড কোম্পানিকেও তাদের উৎপাদন কয়েক দিনের জন্য বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার বিরল খনিজ রপ্তানিতে কড়াকড়ির পাশাপাশি চীন মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের বিরুদ্ধে একচেটিয়া ব্যবসার তদন্ত শুরু করেছে। এতে করে আরেকটি চিপ তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান কেনার যে প্রক্রিয়া কোয়ালকম চালাচ্ছিল, সেটি থমকে যেতে পারে। কোয়ালকম যদিও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, কিন্তু তাদের ব্যবসার একটি বড় অংশ চীনে রয়েছে।