ঢাকা, শনিবার, অক্টোবর ১১, ২০২৫ | ২৬ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

হঠাৎ কী হলো! আমেরিকায় শাটডাউনে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই শুরু ট্রাম্প প্রশাসনের, আদালতে মামলা


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম

হঠাৎ কী হলো! আমেরিকায় শাটডাউনে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই শুরু ট্রাম্প প্রশাসনের, আদালতে মামলা

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সরকারি অচলাবস্থার (শাটডাউন) মধ্যেই এক নাটকীয় ঘটনা। ডেমোক্র্যাটদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কৌশল হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন হাজার হাজার সরকারি কর্মীকে ছাঁটাই করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই পদক্ষেপ দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে।

'ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে'— ঘোষণা হোয়াইট হাউজের
হোয়াইট হাউজের ব্যবস্থাপনা ও বাজেট মন্ত্রণালয়ের পরিচালক রাসেল ভট শুক্রবার সকালে সামাজিক মাধ্যম এক্স (আগের টুইটার)-এ একটি পোস্টে সরাসরি ঘোষণা করেন, “ছাঁটাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে”।

পরে তার দপ্তরের এক মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, এই ছাঁটাই 'বড় পরিসরে' হচ্ছে। এরপর শুক্রবার বিকেলে প্রশাসন জানায়, প্রাথমিকভাবে সাতটি সংস্থায় চার হাজারেরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করা শুরু হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, সরকার কর্মী ছাঁটাইয়ের কমপক্ষে ৩০ দিন আগে তাদের আগাম নোটিশ দিতে বাধ্য। রাসেল ভটের ঘোষণার পর ট্রেজারি বিভাগ এবং স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগ নিশ্চিত করেছে, তারা কর্মীদের ছাঁটাই সংক্রান্ত নোটিশ দেওয়া শুরু করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগও জানিয়েছে, তাদের সাইবারসিকিউরিটি ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সিতে ছাঁটাই হবে। যদিও এই সংস্থায় অনেক কর্মীকে 'অত্যাবশ্যকীয়' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর মামলা, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে 'অবৈধভাবে' ছাঁটাইয়ের অভিযোগ
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে আমেরিকার দুটি বড় শ্রমিক ইউনিয়ন— আমেরিকান ফেডারেশন অব গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িস (এএফজিই) ও এএফএল-সিআইও।

এএফজিই-র সভাপতি এভারেট কেলি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি অচলাবস্থাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে দেশজুড়ে হাজারো কর্মীকে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করছে, যারা জনগণকে গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিয়ে আসছেন— এটি লজ্জাজনক।”

অতীতে সরকারি অচলাবস্থায় কর্মীরা বেতন ছাড়া ছুটিতে গেলেও সরকার পুনরায় চালু হলে তারা বকেয়া বেতন পেতেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। বর্তমান শাটডাউন শুরু হয়েছে ১০ দিন আগে, যখন কংগ্রেস সদস্যরা সরকারি তহবিল বাড়ানোর কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন। এইবার ট্রাম্প প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, কর্মীদের বকেয়া বেতন হয়তো দেওয়া হবে না।

ডেমোক্র্যাট বনাম রিপাবলিকান: কে দায়ী?
রিপাবলিকান সিনেটর জন থুন বলেন, “তারা (হোয়াইট হাউজ) ১০ দিন অপেক্ষা করেছে। শেষ পর্যন্ত তাদের কিছু সিদ্ধান্ত নিতেই হতো, কোন খাতে ব্যয় অগ্রাধিকার পাবে সেটা নির্ধারণ করতে।”

অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার ট্রাম্প ও রাসেল ভটের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলার তৈরির অভিযোগ করেছেন। ডেমোক্রেটরা রিপাবলিকানদের ব্যয়ের প্রস্তাবে ভোট দিতে অস্বীকার করেছেন। কারণ তাতে স্বাস্থ্যবিমার খরচ কমাতে সাহায্যকারী করছাড় নবায়ন এবং মেডিকেইড-এর কাটছাঁট প্রত্যাহারের কোনো ব্যবস্থা নেই।

জবাবে, রিপাবলিকানরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন— ডেমোক্রেটরাই সরকার বন্ধের জন্য দায়ী এবং এর ফলস্বরূপ সৃষ্ট অচলাবস্থার কারণ তারাই।

বর্তমানে সরকারি অচলাবস্থায় অত্যাবশ্যক নন এমন প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার ফেডারেল কর্মীকে (যা ফেডারেল কর্মীবাহিনীর প্রায় ৪০ ভাগ) বেতন ছাড়া ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।