ঢাকা, রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫ | ২৬ আশ্বিন ১৪৩২
Logo
logo

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশের তরল গ্যাস আনা জাহাজ ও ইরানি এলপিজি রপ্তানি লক্ষ্যবস্তু


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:১০ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা: বাংলাদেশের তরল গ্যাস আনা জাহাজ ও ইরানি এলপিজি রপ্তানি লক্ষ্যবস্তু

ইরানের পেট্রোলিয়াম এবং এলপিজি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস রপ্তানিতে সহায়তার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের কার্যক্রম বন্ধ করা, যা অবৈধভাবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি পণ্য সরবরাহ করছিল।

মার্কিন অর্থ বিভাগের অধীনে অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল  বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর এই নতুন পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়।  জানিয়েছে, এটি ইরানের অর্থপ্রবাহ সীমিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন বন্ধ করার নীতির অংশ।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ জাহাজ ও প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে ইরানি এলপিজির দুটি চালান সরবরাহ করেছে। এছাড়া, অন্যান্য চলমান পরিবহন কার্যক্রমও এই চক্রের আওতায় রয়েছে। OFAC জানিয়েছে, “এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইরান বিলিয়ন ডলারের পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য রপ্তানি করছে, যা দেশের সরকারের বড় রাজস্ব উৎস।”

মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো ইরানের জ্বালানি রপ্তানি কার্যক্রম দুর্বল করা এবং ওয়াশিংটনের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ নীতি বজায় রাখা।

নতুন তালিকায় যুক্ত হয়েছে দু’টি সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক প্রতিষ্ঠান—স্লোগাল এনার্জি  এবং মারকান হোয়াইট ট্রেডিং ক্রুড অয়েল অ্যাব্রোড কোম্পানি । ২০২৪ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষিণ এশিয়ায় ইরানি এলপিজি চালান পাঠানোর অভিযোগে যুক্ত।  জানিয়েছে, এদের মাধ্যমে চালানগুলো শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছেছে।

মার্কিন তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের শুরুতে পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ‘গ্যাস ডিওর’ ১৭ হাজার টনেরও বেশি ইরানি এলপিজি বাংলাদেশে সরবরাহ করেছিল। এছাড়া, ২০২৪ সালের শেষ দিকে কোমোরোস পতাকাবাহী জাহাজ ‘আদা’ (পূর্বের নাম ক্যাপ্টেন নিকোলাস) কিছু বাংলাদেশি ক্রেতার কাছে এলপিজি পৌঁছে দেয়। এই জাহাজটিকে সর্বশেষ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য ঘটনা, গত বছরের ১৩ অক্টোবর ‘বিএলপিজি সোফিয়া’ নামের ছোট একটি জাহাজে এলপিজি খালাসের সময় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আগুন লাগে। প্রায় ৩৪ হাজার টন এলপিজি বহনকারী জাহাজটি আইনি জটিলতার কারণে কয়েক মাস আটকে থাকার পর ৫ সেপ্টেম্বর পুনরায় গ্যাস স্থানান্তরের অনুমতি পায়। ভেসেল-ট্র্যাকিং তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি এখনও চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা আছে।

যদিও কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থা সরাসরি নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই, তবে এই চালানের কারণে বাংলাদেশ এখন যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারিতে। মার্কিন আইন অনুসারে, নিষিদ্ধ লেনদেনে যুক্ত বিদেশি কোম্পানিগুলো ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর ঝুঁকিতে থাকে, যা যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থায় প্রবেশাধিকার হারানোর মতো কঠিন পরিণতি বয়ে আনতে পারে।