এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৪:১০ পিএম

গবেষণায় বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য! সরকারি পরিসংখ্যানই প্রমাণ করছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে কমপক্ষে ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তা বরাদ্দ করেছে। মুক্ত গবেষণা কেন্দ্রগুলোর এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিশাল অঙ্কের সামরিক সহায়তার মাধ্যমে আমেরিকা গাজা যুদ্ধের কেবল সমর্থকই নয়, বরং গাজায় অপরাধের 'একটি প্রধান অংশীদারও'।
লকহিড-বোয়িংয়ের লাভ: ৩০ বিলিয়ন ডলারের নেপথ্যে কী?
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত, ইসরায়েলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আর পরোক্ষ সহায়তাসহ এই সংখ্যা ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
এই সহায়তার অর্থ মূলত লকহিড মার্টিন এবং বোয়িংয়ের মতো আমেরিকার সামরিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনার জন্য ব্যয় করা হয়। এর ফলে দেশটির সামরিক শিল্পের জন্য একটি লাভজনক চক্র তৈরি হয়েছে, যা যুদ্ধের আগুন জিইয়ে রাখছে।
মেহর নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, গাজা যুদ্ধের জন্য আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক গড়ে ৮৫ থেকে ১৬৫ ডলার প্রদান করেছেন। অথচ, দেশের অনেক রাজ্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুতর সংকটের মুখোমুখি। এই বাজেট দিয়ে আমেরিকার ৬০ লক্ষ শিশুর জন্য স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করা যেত কিংবা লক্ষ লক্ষ নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যেত।
জনমত বদলে যাচ্ছে, তবুও বন্ধ হচ্ছে না সামরিক সাহায্য
গাজা যুদ্ধের বিষয়ে আমেরিকার জনমত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে। জরিপগুলোতে দেখা যায়, এই বয়সের বেশিরভাগ মানুষ ইসরায়েলকে সামরিক সাহায্যের তীব্র বিরোধিতা করে। এমনকি আমেরিকার ইহুদি সম্প্রদায়ও বর্তমানে সমালোচনায় মুখর। তারা 'ইহুদিদের জন্য শান্তি'-এর মতো আন্দোলনগুলো থেকে এই সাহায্য বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছে।
তবে, শক্তিশালী লবিং এবং কংগ্রেসে প্রভাবশালী দ্বিদলীয় কাঠামোর কারণে এই নীতি পরিবর্তন করা সম্ভব হচ্ছে না। উল্লেখ্য, ওবামার ১০ বছরের চুক্তি, যা ইসরায়েলকে বার্ষিক ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সাহায্য বরাদ্দ করে, তা ২০২৮ সাল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে, গাজায় আমেরিকার শান্তি মধ্যস্থতার দাবির আড়ালে রয়েছে তার অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থ। যতদিন যুদ্ধের এই লাভজনক চক্র চলতে থাকবে, ততদিন মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির কথা নিরর্থকই থেকে যাবে।