ঢাকা, বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৩০, ২০২৫ | ১৫ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

অবিশ্বাস্য অপচয়! ৪ কোটি টাকার 'গ্রিন হাউজ' ব্যবহার শুরুর আগেই ভেঙে দিচ্ছে বিসিবি!


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম

অবিশ্বাস্য অপচয়! ৪ কোটি টাকার 'গ্রিন হাউজ' ব্যবহার শুরুর আগেই ভেঙে দিচ্ছে বিসিবি!

বর্ষা মৌসুমে ক্রিকেটারদের অনুশীলন নির্বিঘ্ন রাখার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি মিরপুর একাডেমি মাঠে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে একটি 'গ্রিন হাউজ' প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। প্রায় দুই বছর ধরে এই কাজ চললেও, সেখানে এখনো পর্যন্ত অনুশীলনের কোনো সুযোগই হয়নি ক্রিকেটারদের!

এত অর্থ খরচ করে তৈরি করা এই 'গ্রিন হাউজ উইকেট' ব্যবহারের আগেই এখন তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কেন নেওয়া হলো এই সিদ্ধান্ত?

বিসিবির বর্তমান কমিটি মনে করছে, এই প্রকল্পটি বাস্তবে ক্রিকেটারদের কোনো কাজেই আসবে না। তাদের ধারণা, প্রকল্পটি বাড়ানোর জন্যই এখানে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে, যা একাডেমির সুন্দর পরিবেশও নষ্ট করেছে। তাই ব্যবহারের আগেই এই প্রকল্পটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশে জাতীয় দল, বয়সভিত্তিক দল—সবারই অনুশীলনের সব সুযোগ-সুবিধা মূলত মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও একাডেমি মাঠেই সীমাবদ্ধ। ইনডোরেও সুযোগ আছে, কিন্তু বড় টুর্নামেন্ট ও বিপিএলের সময় একই জায়গায় সবার অনুশীলন করা বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্রিকেটারদের অভিযোগ ছিল।

প্রকল্পটির পেছনের ভাবনা

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, মিরপুর বিসিবি একাডেমি মাঠের এক প্রান্তে ৩০ মিটার প্রশস্ত ও ৭৫ মিটার লম্বা একটি গ্রিন হাউজ স্থাপন করা হবে। মূলত মরুময় বা শীতপ্রধান দেশগুলোতে কৃষিকাজে ব্যবহৃত এই প্রযুক্তিটি ক্রিকেট অনুশীলনের জন্য নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া কাজে লাগায়।

প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, বৃষ্টির দিনে এটি ছাদ হিসেবে ব্যবহৃত হবে, আর অন্য সময় ছাদটি খুলে ফেলা যাবে। সেই ছাদ তৈরি হওয়ার কথা ছিল মূলত পলিথিন জাতীয় জিনিস দিয়ে। প্রাথমিকভাবে মিরপুর একাডেমিতে উত্তর-দক্ষিণ দিক মিলিয়ে ২০টি উইকেট বানানোর পরিকল্পনা ছিল। ওই বছরের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত থাকলেও পরে সময় বাড়তে থাকে। যদিও মিরপুরে বর্ষা মৌসুমে অনুশীলনের জন্য একটি ইনডোর আছে, কিন্তু সেটি অনেক পুরোনো হয়ে যাওয়ায় ক্রিকেটাররা সেখানে অনুশীলন করতে আগ্রহ দেখান না। এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হলেও পরে বাজেট আরও বেড়ে যায়।

বিসিবির কর্মকর্তার বক্তব্য

যোগান্তরের কাছে বিসিবির ফ্যাসিলিটিস বিভাগের চেয়ারম্যান শাহনিয়ান তানিম বলেন, "এই প্রকল্প পুরোই অর্থহীন। এটা ক্রিকেটারদের কোনো কাজে আসে না। আমরা এটা তুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।"

গ্রাউন্ডস কমিটি ও ফ্যাসিলিটিস বিভাগের একটি বিকল্প ভাবনাও রয়েছে। আগামী ২ নভেম্বরের সভায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গ্রাউন্ডস কমিটির সহসভাপতি আদনান রহমান দীপনও যুগান্তরকে বলেন, "গ্রাউন্ডস কমিটি ও ফ্যাসিলিটিস বিভাগ মিলে আলোচনা করে দেখেছি, গ্রিন হাউজ প্রকল্পের বাস্তবে কোনো কাজ নেই। এ বিষয়ে আমরা একটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করব। বোর্ড সভায় এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।"