ঢাকা, শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫ | ১৬ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

এক টাকাও লাগবে না! শুধু এই শর্তগুলো মানলেই ফেসবুকে ফ্রিতে মিলবে কাঙ্ক্ষিত নীল ব্যাজ!


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:১০ পিএম

এক টাকাও লাগবে না! শুধু এই শর্তগুলো মানলেই ফেসবুকে ফ্রিতে মিলবে কাঙ্ক্ষিত নীল ব্যাজ!

আজকের যুগে ফেসবুকের নীল ব্যাজ বা ভেরিফায়েড আইডি মানেই যেন এক আলাদা পরিচয়, বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্মানের প্রতীক। সাংবাদিক, রাজনীতিক, উদ্যোক্তা, প্রতিষ্ঠান বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর—যে কেউই এখন চান নিজের প্রোফাইল বা পেজের পাশে সেই কাঙ্ক্ষিত নীল টিক চিহ্নটি দেখতে। অনেকেই জানেন না যে, ফেসবুকের নীল ব্যাজ টাকা খরচ না করেও ফ্রি পেতে কিছুটা সুযোগ এখনও রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টের ভেরিফিকেশন বা যাচাইকরণের ধারণাটি প্রথম চালু করে এক্স (আগের টুইটার) ২০০৯ সালে। এরপর ২০১৩ সালে ফেসবুক নিজস্ব নীল ব্যাজের ব্যবস্থা চালু করে, যার মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মে প্রকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।

ভেরিফিকেশনের দুটো রাস্তা: ফ্রি ও পেইড
বর্তমানে ফেসবুকে মূলত দুই ধরনের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া চালু আছে:

ট্র্যাডিশনাল (ফ্রি) ভেরিফিকেশন

মেটা ভেরিফায়েড (পেইড সাবস্ক্রিপশন)

২০২৩ সালে 'মেটা ভেরিফায়েড' প্রোগ্রাম চালু হওয়ার পর প্রায় যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একটি মাসিক ফি দিয়ে সহজেই নীল ব্যাজ পেতে পারেন। তবে, ফ্রি ভেরিফিকেশনও এখনও চালু আছে, যদিও এতে অনুমোদন পাওয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন।

ফ্রি ভেরিফিকেশনের যোগ্যতা ও প্রমাণপত্র কী কী লাগবে?
ফেসবুকের নির্দেশনা অনুযায়ী, বিনামূল্যে ভেরিফিকেশন পেতে হলে আপনার অ্যাকাউন্টের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে:

অ্যাকাউন্ট বৈশিষ্ট্য: অ্যাকাউন্টটি অবশ্যই আসল ও সক্রিয় হতে হবে। একই নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকতে পারবে না (ভাষাভিত্তিক ব্যতিক্রম ছাড়া)।

প্রোফাইল/পেজের তথ্য: প্রোফাইল বা পেজে থাকতে হবে 'About' সেকশন, একটি প্রোফাইল ছবি এবং অন্তত একটি সাম্প্রতিক পোস্ট।

জনপ্রিয়তা: ফেসবুকে আপনাকে অনেকেই সার্চ করে—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।

নীতিমালা অনুসরণ: ফেসবুক ও মেটার নীতিমালা এবং কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।

প্রমাণপত্র হিসেবে যা জমা দেবেন:

ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টের জন্য: জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স।

প্রতিষ্ঠানের জন্য: রেজিস্ট্রেশন সনদ, ট্যাক্স বা ব্যবসায়িক নথি।

প্রয়োজনে ফোন বা বিদ্যুৎ বিলের মতো প্রমাণও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফ্রিতে নীল ব্যাজ পাওয়ার জন্য আবেদন করবেন যেভাবে
আবেদন প্রক্রিয়াটি খুবই সহজ, কিন্তু তা সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে:

ধাপ ১: সরাসরি Facebook Verification Request Form-এ যান।

ধাপ ২: যেই প্রোফাইল বা পেজ ভেরিফাই করতে চান, সেটি সিলেক্ট করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন।

ধাপ ৩: 'Notability' বা জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিন, যেমন—সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত আপনার বা আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত লিংক, অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ইত্যাদি।

ধাপ ৪: ফর্ম পূরণ শেষে 'Send' ক্লিক করুন।

এরপর ফেসবুক আপনার আবেদনটি পর্যালোচনা করবে। কোনো কারণে আবেদন ব্যর্থ হলে, ৩০ দিন পর আপনি আবার আবেদন করার সুযোগ পাবেন।

কেন আপনার ভেরিফিকেশন দরকার এবং কীভাবে সম্ভাবনা বাড়াবেন?
ভেরিফিকেশন পেলে প্রোফাইল বা পেজের বিশ্বাসযোগ্যতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, ভুয়া অ্যাকাউন্টের প্রভাব কমে, এবং সার্চ রেজাল্টে পেজ উপরের দিকে আসে। মানুষ সহজে আপনাকে খুঁজে পায় এবং আসল অ্যাকাউন্টে আস্থা রাখে।

ভেরিফিকেশন পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে করণীয়:

স্থিরতা বজায় রাখুন: অ্যাকাউন্টে ঘন ঘন পরিবর্তন করবেন না (যেমন নাম, প্রোফাইল ছবি বা ইউজারনেম)।

সম্পূর্ণ প্রোফাইল: প্রোফাইল ছবি, কভার ফটো, বিভাগ এবং 'About' সেকশন সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে পূরণ করুন।

সঠিক নাম: পেজের নাম সঠিক রাখুন। কোনো অশালীন শব্দ, অপ্রয়োজনীয় চিহ্ন বা সব বড় অক্ষর ব্যবহার করবেন না।

নীতিমালা মানুন: কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড কঠোরভাবে মেনে চলুন এবং অবৈধ বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট এড়িয়ে চলুন।

ফেসবুক ভেরিফিকেশন এখন কেবল জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। একজন সাধারণ ব্যবহারকারীও শর্ত মেনে, প্রোফাইল পরিপূর্ণ রেখে এবং সঠিকভাবে আবেদন করলে ফ্রিতে নীল ব্যাজ পেতে পারেন। ভাগ্য ভালো হলে খুব অল্প সময়েই আপনার প্রোফাইল বা পেজের পাশে জ্বলে উঠবে সেই কাঙ্ক্ষিত নীল টিকচিহ্ন!