এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:১১ পিএম

যুক্তরাষ্ট্র দশকের পর দশক ধরে যে 'সরকার পরিবর্তন' ও 'জাতি গঠনের' নীতি অনুসরণ করে আসছিল, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে তার ইতি ঘটেছে। দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড স্পষ্ট জানিয়েছেন, এখন ওয়াশিংটনের কৌশলগত অগ্রাধিকার বদলে গেছে – মানবাধিকার নয়, বরং 'অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকেই' এখন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বাহরাইনে অনুষ্ঠিত 'মানামা ডায়ালগ' নামের বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলনে তিনি এই চমকপ্রদ বক্তব্য দেন। তার এই মন্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি।
কী বলেছিলেন গ্যাবার্ড?
গ্যাবার্ড তার ভাষণে বলেন, "দশকের পর দশক ধরে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি সরকার পরিবর্তন ও জাতি গঠনের একটি ব্যর্থ চক্রে আটকে ছিল। এটি ছিল একটি 'সবার জন্য প্রযোজ্য' নীতি, যেখানে আমরা সরকার উৎখাত করা, অন্য দেশে আমাদের শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা এবং অজানা সংঘাতে জড়িয়ে পড়তাম। এর ফলশ্রুতিতে আমরা মিত্রের চেয়ে বেশি শত্রু তৈরি করেছি।"
তিনি এই পুরনো নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন যে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের "ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার" ব্যয় হয়েছে, অগণিত মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং আইএসআইএস-এর মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থান ঘটেছে।
নতুন নীতির চ্যালেঞ্জ
যদিও এই নতুন পথ মসৃণ নয় বলে স্বীকার করেছেন গ্যাবার্ড। তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এখনও 'ভঙ্গুর' অবস্থায় আছে এবং ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় রয়েছে। তবুও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে ট্রাম্প এই নতুন কৌশলগত দিকেই অটল থাকবেন।
এই বদল ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক চিন্তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তার প্রথম মেয়াদেই তিনি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি করেছিলেন এবং সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারার মতো বিতর্কিত ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়েছিলেন।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোই এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান লক্ষ্য, অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় – এই বার্তাই দিলেন গ্যাবার্ড।