ঢাকা, বুধবার, নভেম্বর ৫, ২০২৫ | ২০ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে ট্রাম্পের বিস্ফোরক হুমকি! 'মমদানি জিতলে ফেডারেল তহবিল পাবে না শহর'"


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৪ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:১১ পিএম

নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে ট্রাম্পের বিস্ফোরক হুমকি! 'মমদানি জিতলে ফেডারেল তহবিল পাবে না শহর'"

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিতর্কিত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মমদানি যদি জয়ী হন, তাহলে তিনি এই শহরের জন্য ফেডারেল তহবিল বন্ধ করে দেবেন।

সোমবার তাঁর ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, 'যদি কমিউনিস্ট প্রার্থী জোহরান মমদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে আমি আমার প্রিয় এই শহরের জন্য বাধ্যতামূলিক ন্যূনতম সহায়তা ছাড়া আর কোনো ফেডারেল তহবিল দেব না। কারণ একজন কমিউনিস্টের নেতৃত্বে এই শহরের সাফল্য বা টিকে থাকার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। বরং পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।'

কে এই জোহরান মমদানি?

জোহরান মমদানি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কুইন্স জেলার ৩৬তম আসনের প্রতিনিধি এবং একজন ডেমোক্র্যাট সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংস্কার, গণপরিবহন সম্প্রসারণ এবং সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচির পক্ষে সক্রিয়। যদিও তিনি নিজেকে 'ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট' হিসেবে পরিচয় দেন, কিন্তু রক্ষণশীল সমালোচকরা প্রায়ই তাঁকে 'কমিউনিস্ট' আখ্যা দেন, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।

নির্বাচনের হালনাগাদ অবস্থা

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রচারণা এখন তুঙ্গে। আগাম ভোট ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে, আর মঙ্গলবার পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি নিবন্ধিত ভোটার শহরের পরবর্তী মেয়র বেছে নিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, মমদানি এগিয়ে আছেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুয়োমো এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ারের চেয়ে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে যৌন হয়রানি কেলেঙ্কারির কারণে গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগ করা কুয়োমো এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন, কারণ জুন মাসের প্রাইমারিতে তিনি মমদানির কাছে পরাজিত হন।

ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল

ট্রাম্প তাঁর সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী স্লিওয়াকে না ভোট দিয়ে বরং কুয়োমোকে ভোট দিতে। তাঁর যুক্তি, স্লিওয়াকে ভোট দিলে তা আসলে মমদানির পক্ষেই যাবে। ট্রাম্পের ভাষায়, 'আপনি অ্যান্ড্রু কুয়োমোকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করুন বা না করুন, আপনার আসলে কোনো বিকল্প নেই। তাঁকে ভোট দিন এবং আশা করুন তিনি দারুণ কাজ করবেন।'

মমদানির উত্থান ও সমর্থন

গত ২৪ জুন প্রাইমারিতে জয়ের মাধ্যমে মমদানি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে সাড়া ফেলেছেন। এরপর থেকেই তিনি প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট নেতাদের সমর্থন পেতে শুরু করেন। এর মধ্যে আছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস এবং নিউইয়র্কের বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হোচুল। এছাড়া ক্ষুদ্র দাতাদের কাছ থেকেও তিনি ধারাবাহিক আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন।

মমদানির নীতি ও বিতর্ক

মমদানির প্রধান নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের ধনীদের ওপর কর বৃদ্ধি, কর্পোরেট ট্যাক্স বাড়ানো, স্থিতিশীল অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়ার হার স্থগিত রাখা এবং সরকারি ভর্তুকিতে বাসস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা।但这些 উদ্যোগ নিয়ে শহরের ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, এতে নিউইয়র্কের অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে。

তাঁর এই উত্থান ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জন্য যেমন ঝুঁকি, তেমনি নতুন সম্ভাবনাও নিয়ে এসেছে। তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করার প্রয়োজনে দলটি যেখানে নতুন ধারা খুঁজছে, সেখানে মমদানির ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নীতি (তিনি গাজায় 'গণহত্যা'র কঠোর সমালোচনা করেছেন) এবং তাঁর সমাজতান্ত্রিক অবস্থান রিপাবলিকানদের জন্য নতুন আক্রমণের সুযোগ তৈরি করতে পারে।

ওবামার সমর্থন

গত শনিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নিউ জার্সিতে এক নির্বাচনী সমাবেশে অংশ নিয়ে মমদানির প্রতি তাঁর সমর্থন জানান। মমদানির প্রচারদলের মুখপাত্র ডোরা পেকেক জানান, 'প্রেসিডেন্ট ওবামার সমর্থন এবং তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে মমদানি অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, এই শহরে এক নতুন ধরনের রাজনীতি গড়ে তোলার সময় এসেছে।'