ঢাকা, বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৬, ২০২৫ | ২২ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

ফিলিপাইনে কালমেগি ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু ১১৪ ছাড়িয়েছে! প্রেসিডেন্ট মার্কোস জারি করলেন জাতীয় দুর্যোগ


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

ফিলিপাইনে কালমেগি ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যু ১১৪ ছাড়িয়েছে! প্রেসিডেন্ট মার্কোস জারি করলেন জাতীয় দুর্যোগ

ফিলিপাইনে এবার ধ্বংসলীলা চালিয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় কালমেগি। ভয়াবহ এই ঝড় ও বন্যার কারণে এখন পর্যন্ত ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর যে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জরুরি ভিত্তিতে 'জাতীয় দুর্যোগ' ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই ভয়াবহ খবরটি জানানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের পুরো শহরই এখন পানির নিচে। বন্যার কাদা-পানির স্রোতে সাধারণ গাড়ি থেকে শুরু করে বিশাল ট্রাক এবং কনটেইনার পর্যন্ত ভেসে গেছে।

কেবল সেবুতেই প্রাণহানি ৯৯

সেবু দ্বীপের প্রতিরক্ষা অফিসের ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর রাফায়েলিটো আলেজান্দ্রো জানিয়েছেন, শুধুমাত্র সেবু অঞ্চলেই এখন পর্যন্ত ৯৯ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা গেছে। সারাদেশে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ জনে। এছাড়াও ৮২ জন আহত হয়েছেন এবং এখনও ১২৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদের খোঁজে উদ্ধারকারী দল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

কেন জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা?

প্রেসিডেন্ট মার্কোস সাংবাদিকদের বলেন, কালমেগির ক্ষয়ক্ষতি এতই ব্যাপক যে, এবং এই সপ্তাহান্তেই দেশটিতে আরেকটি ঝড় ‘উওয়ান’ আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস থাকায়, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

তিনি স্থানীয় মিডিয়াকে বলেন, "প্রায় ১০ থেকে ১২টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতগুলো অঞ্চল যখন জড়িত, তখন এটিকে জাতীয় দুর্যোগই বলতে হবে।"

জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণার মানে কী?

এর মানে হলো, এমন একটি পরিস্থিতি যেখানে ব্যাপক প্রাণহানি ও সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা পুরোপুরি বিঘ্নিত হয়েছে। এই ঘোষণার ফলে সরকারি সংস্থাগুলো জরুরি তহবিল দ্রুত সংগ্রহ করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে ও বিতরণ করতে অনেক বেশি ক্ষমতা পাবে।

ফিলিপাইনের জন্য একের পর এক বিপর্যয়

স্থানীয়ভাবে ‘টিনো’ নামে পরিচিত এই ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার ভোরে ফিলিপাইনে আঘাত হানে। এর মধ্য দিয়েই ফিলিপাইনের জন্য বিপর্যয়ের পালা শেষ হলো না। গত সেপ্টেম্বরের শেষেই সুপার টাইফুন রাগাসা এবং টাইফুন বুয়ালোই আঘাত হেনেছিল, যাতে এক ডজনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। তারও আগে, ৩০ সেপ্টেম্বর একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে সেবু অঞ্চলেই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল।

ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডেও আতঙ্ক

ইতিমধ্যে কালমেগি ঘূর্ণিঝড় ফিলিপাইন ছেড়ে মধ্য ভিয়েতনামের দিকে এগিয়ে চলেছে। সেখানে ইতিমধ্যেই রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পূর্বাভাস বলছে, শুক্রবার সকাল নাগাদ এটি ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে। এরইমধ্যে সেখানে ৫০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল বা পুনরায় সময়সূচি করা হয়েছে। পাশাপাশি, থাইল্যান্ডও সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের জন্য সতর্কতা জারি করেছে।