এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম

দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বন্দরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী আসার ঘটনায় রেগে আগুন উত্তর কোরিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী নো কোয়াং চোল স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, শত্রুদের বিরুদ্ধে এখন থেকে তারা ‘আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ’ নেবে।
উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর মাত্র একদিন পরই এই হুমকি দিলেন তাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
শনিবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানায়, “আমরা শক্তিশালী শক্তি দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং শান্তি রক্ষার নীতিতে শত্রুদের হুমকির বিরুদ্ধে এখন আরও আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেব।”
দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপও একই রকম বক্তব্য প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, “উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য কোনো ধরনের হুমকিই সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে এবং প্রয়োজনীয় উপায়ে তার জবাব দেওয়া হবে।”
কেন এই হুমকি?
এর পেছনে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বৃহস্পতিবার সাইবার-সম্পর্কিত অর্থপাচারের অভিযোগে ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার কিছু ব্যক্তি ও সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তার অল্প কয়েকদিন আগেই দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। এর ঠিক পরপরই শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব উপকূলে সাগরে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী নো কোয়াং চোল সম্প্রতি দুই কোরিয়ার সীমান্ত সফর এবং সিউলে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা বৈঠকের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই বৈঠকগুলো আসলে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক ও প্রচলিত বাহিনীকে একত্র করার ষড়যন্ত্রের অংশ।
চোল স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতার একটি প্রকাশ্য উদাহরণ।”
মার্কিন বিমানবাহী রণতরী এখন কোথায়?
দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে বুধবার বুসানের নৌঘাঁটিতে পৌঁছেছে মার্কিন পারমাণবিক শক্তিচালিত বিমানবাহী রণতরী 'ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন'।
গত মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়া সফরকালে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছিলেন, “সিউলের সঙ্গে ওয়াশিংটনের জোটের মূল লক্ষ্য হলো উত্তর কোরিয়াকে নিরস্ত করা।” তবে তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন বাহিনীকে আঞ্চলিক হুমকির মোকাবিলায় আরো নমনীয়ভাবে ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
গত মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সফর শুরুর সময় তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠক আর হয়নি, বরং তার এক সপ্তাহ পরই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায় পিয়ংইয়ং।