ঢাকা, রবিবার, নভেম্বর ৯, ২০২৫ | ২৫ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

আশ্চর্য! ট্রাম্পের সঙ্গে 'ঐতিহাসিক' বৈঠকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারা: কী আছে আমেরিকার গোপন প্ল্যান?


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

আশ্চর্য! ট্রাম্পের সঙ্গে 'ঐতিহাসিক' বৈঠকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারা: কী আছে আমেরিকার গোপন প্ল্যান?

সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা তাঁর সরকারি সফরের অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। সবচেয়ে বড় খবর হলো, ওয়াশিংটন তাঁকে 'সন্ত্রাসীর' তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ঠিক একদিন পরই তিনি এই গুরুত্বপূর্ণ সফরে গেলেন। এই সফরটিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে একটি বড় বাঁকবদল হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা।

আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেই প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন শারা
গত বছরের শেষ দিকে ইসলামপন্থী এই নেতা শারার নেতৃত্বে বিদ্রোহী বাহিনী সিরিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল। ক্ষমতা দখলের পর পরই শারা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। তাঁর এই উত্থান ছিল নাটকীয়।

১৯৪৬ সালের পর এই প্রথম!
আগামীকাল সোমবার শারা হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করবেন। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৪৬ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্টের এটিই প্রথম সফর। এই ঐতিহাসিক বৈঠক ঘিরে এখন বিশ্বজুড়ে কৌতূহল তুঙ্গে।

সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা আল–শারা এর আগে গত মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় সৌদি আরবের রিয়াদে প্রথমবারের মতো তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

ISIS-এর বিরুদ্ধে জোটে শামিল হবে সিরিয়া?
যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া–বিষয়ক বিশেষ দূত টম ব্যারাক চলতি মাসের শুরুতে বড়সড় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটে সিরিয়াকে যুক্ত করতে শারা একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।

দামেস্কের কাছে আমেরিকার সামরিক ঘাঁটি!
সিরিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো মানবিক সহায়তা সমন্বয় করা এবং সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যকার চুক্তির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা।

কেন 'সন্ত্রাসী' তালিকা থেকে বাদ পড়লেন শারা?
গত শুক্রবার সন্ত্রাসী তালিকা থেকে শারার নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তটি আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র টমি পিগট জানান, শারা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়াগুলো পূরণ করছে। যেমন: তারা নিখোঁজ মার্কিন নাগরিকদের খুঁজে বের করা এবং অবশিষ্ট রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করার জন্য কাজ করছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, “বাশার আল-আসাদের পতন এবং আসাদ সরকারের ৫০ বছরের বেশি সময়ের দমন–পীড়নের অবসান হওয়ার পর সিরিয়ার নেতৃত্ব যে অগ্রগতি দেখিয়েছে, সেটার স্বীকৃতি হিসেবেই আমরা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছি।”

ওয়াশিংটন সফর প্রথমবার, লক্ষ্য সিরিয়ার পুনর্গঠন
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফর করেছিলেন শারা। সেটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর প্রথম সফর। আর এবার তিনি প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন সফর করছেন।

ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সিরিয়ার নতুন নেতৃত্ব তাদের সহিংস অতীত থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। সাধারণ সিরীয় নাগরিক ও বিদেশি শক্তির কাছে নিজেদের একটি মধ্যমপন্থী ভাবমূর্তি উপস্থাপনের চেষ্টা করছে তারা।

ধারণা করা হচ্ছে, শারা দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিপুল অঙ্কের তহবিল চাইবেন। গত অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে বলা হয়েছিল, সিরিয়াকে পুনর্গঠনে ২১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার তহবিলের প্রয়োজন হবে।