এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম

দিল্লির ঐতিহাসিক লাল কেল্লার খুব কাছেই সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক গাড়ি বিস্ফোরণ। এই ভয়াবহ ঘটনায় অন্তত ৯ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণটি ঘটেছিল একটি হুন্ডাই আই২০ গাড়িকে ঘিরে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত আত্মঘাতী হামলা হতে পারে। গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা গেছে, এই হামলার পিছনে রয়েছেন মোহাম্মদ উমর নামের এক সন্দেহভাজন, যিনি ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিকেল কলেজে একজন চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতেন! তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ফরিদাবাদের একটি 'হোয়াইট কলার টেরর মডিউল'-এর সাথেও জড়িত ছিলেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ধারণ করেছে চাঞ্চল্যকর কিছু দৃশ্য। তাতে দেখা গেছে, সন্দেহভাজন উমর ওই হুন্ডাই আই২০ গাড়িটি সুনেহরি মসজিদের পাশে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে রেখেছিলেন। তিনি গাড়িটি সেখানে পার্ক করেছিলেন বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে, এবং সন্ধ্যা ৬টা ৪৮ মিনিটে সেখানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশের দাবি, এই হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরক ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও ফুয়েল অয়েল দিয়ে তৈরি। পুলিশের তথ্য মতে, উমরের সহযোগী ছিলেন আদিল আহমদ রাদার এবং আরও দুই ব্যক্তি। তবে বিস্ফোরণের সময় গাড়িতে উমর একাই ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই ঘটনায় জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা ইতিমধ্যেই উমরের মা এবং তাঁর দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে এবং তাদের কঠোর জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে – ফরিদাবাদের আরেক ডাক্তার মুজামিল শাকিল, যাঁর কাছ থেকে ২,৯০০ কেজি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বানানোর সামগ্রী জব্দ করা হয়েছিল, তাঁর সাথেও উমরের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। এছাড়াও, এই হামলার সাথে জড়িত বলে সন্দেহে আমীর এবং তারিক নামের আরও দুই ব্যক্তিকে আটক করে তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গাড়িটির মালিকানা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিল এক গল্প। গাড়িটির আসল মালিক ছিলেন মোহাম্মদ সালমান। এরপর গাড়িটি চলে যায় নাদিমের手中。 সেখান থেকে 'রায়েল কার জোন' এর মাধ্যমে এটি পৌঁছায় আমীর ও তারিকের কাছে। সবশেষে এটি কেনেন মোহাম্মদ উমর। পুলিশ এখন গাড়িটি কেনাবেচার এই পুরো চেইন বা লেনদেনের খুঁটিনাটি তদন্ত করছে।
বিস্ফোরণের পর থেকেই দিল্লি পুলিশ জোরদার করেছে তাদের নিরাপত্তা বলয়। ঘটনাস্থল এবং তার চারপাশের সকল সিসিটিভি ফুটেজ, টোল প্লাজা এবং রাস্তার ক্যামেরার ভিডিও গভীরভাবে scrutinize করা হচ্ছে। সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক হলো, বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে মাত্র দুইজনকে শনাক্ত করা গেছে। বাকি লাশ এবং একটি দেহাংশের পরিচয় নিশ্চিত করতে ডিএনএ পরীক্ষার মতো পদ্ধতির সাহায্য নিতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।