এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ইউহুয়া আগামী বুধবার, ১৯ নভেম্বর চীন সফরে যাচ্ছেন। ১৯৭৫ সালে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পর এটাই প্রথমবার কোনো থাই রাজার চীন সফর হতে যাচ্ছে — যা ইতোমধ্যেই কূটনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
এই সফরটি হচ্ছে থাইল্যান্ড ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন কয়েক বছর ধরেই এই রাজকীয় সফরের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছিল।
যদিও থাইল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকক ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক ক্রমেই ঘনিষ্ঠ হয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার নিয়ে সমালোচনা ও বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক থাই নাগরিক মনে করছেন, আমেরিকা এখন আর আগের মতো তাদের পাশে নেই।
থাই সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সফর থাইল্যান্ড ও চীনের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।”
রাজধানী বেইজিং সফরে থাই রাজা ও রানী সুথিদা স্থানীয় বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থাপনা পরিদর্শন করবেন, যার মধ্যে রয়েছে লিংগুয়াং বৌদ্ধ মন্দির ও বেইজিং এরোস্পেস সিটি। সফর চলাকালীন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও তাঁর স্ত্রী থাই রাজপরিবারের সম্মানে একটি বিলাসবহুল রাষ্ট্রীয় ভোজের আয়োজন করবেন।
বর্তমানে চীন থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে।
চীন-থাই সম্পর্কের উষ্ণতা আরও স্পষ্ট হয়েছিল চলতি বছরের শুরুতে, যখন থাই সরকার মার্কিন সতর্কতা উপেক্ষা করে ৪০ জন উইঘুর আশ্রয়প্রার্থীকে চীনে ফেরত পাঠায়। এর পর আগস্টে ব্যাংককের প্রধান শিল্পকলা কেন্দ্রে উইঘুর ও তিব্বতি শিল্পীদের একটি প্রদর্শনী চীনা কূটনীতিকদের আপত্তির পর সেন্সর করা হয়।
রাজা ভাজিরালংকর্ন ২০১৬ সালে সিংহাসনে বসেন। ৯ বছরের রাজত্বে এটিই হতে যাচ্ছে তাঁর প্রথম বড় বিদেশ সফর। এর আগে, গত এপ্রিল মাসে তিনি ভুটানে স্বল্পমেয়াদি সফর করেছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঐতিহাসিক সফর শুধু দুই দেশের সম্পর্ক নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কূটনৈতিক ভারসাম্যেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে।