ঢাকা, শনিবার, নভেম্বর ১৫, ২০২৫ | ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
Logo
logo

ইউরোপে যুদ্ধের আতঙ্কে জার্মানির চমক! ১৮ বছরেই বাধ্যতামূলক সেনা প্রশিক্ষণ, সম্মানি ৭ লাখ টাকা 


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

ইউরোপে যুদ্ধের আতঙ্কে জার্মানির চমক! ১৮ বছরেই বাধ্যতামূলক সেনা প্রশিক্ষণ, সম্মানি ৭ লাখ টাকা 

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যেন পুরো ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করেছে। কয়েকদিন আগেই বড় সামরিক বাজেট ঘোষণা করেছে সার্বিয়া। তারও আগে ফ্রান্স সম্ভাব্য যুদ্ধের আশঙ্কায় ইউরোপকে সতর্ক করে। এবার সেই পথেই হাঁটল ইউরোপের প্রভাবশালী দেশ জার্মানি। দেশটি ১৮ বছর বয়সী সকল নাগরিকের জন্য সামরিক যোগ্যতা যাচাই ও প্রশিক্ষণকে বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে। নতুন ব্যবস্থায় চালু হচ্ছে স্বেচ্ছাশ্রমভিত্তিক সামরিক সেবা।

জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বোরিস পিস্তোরিয়াস জানান, আগামী জানুয়ারি থেকেই নতুন স্বেচ্ছাশ্রমভিত্তিক সামরিক সেবা কার্যক্রম শুরু হবে। আগ্রহী তরুণদের জন্য থাকবে বাড়তি সুবিধা ও আকর্ষণীয় বেতন। নতুন নিয়মে প্রতি মাসে স্বেচ্ছাসেবীরা পাবেন ২,৬০০ ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬ লাখ টাকারও বেশি। পিস্তোরিয়াসের আশা, ২০২৬ সালের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছাবে।

বর্তমানে জার্মান সেনাবাহিনী বুন্দেসওয়ার-এ প্রায় ১ লাখ ৮২ হাজার সৈন্য রয়েছে। কিন্তু ন্যাটোর মানদণ্ড পূরণ করতে ২০৩৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ২ লাখ ৬০ হাজার করতে চায় দেশটি। স্বেচ্ছাসেবী পর্যাপ্ত না হলে বাধ্যতামূলক সেনাসেবা ফের চালুর দাবিতে দেশে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। কনজারভেটিভ দল সিডিইউ বলছে—স্বেচ্ছাসেবী না পেলে বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা ফিরিয়ে আনতেই হবে।

অন্যদিকে সামাজিক গণতান্ত্রিক দল বাধ্যতামূলক সেবা ফেরানোর প্রস্তাব নাকচ করেছে। তাদের মতে, চূড়ান্ত সমঝোতার ভিত্তিতে স্বেচ্ছাশ্রম চালু রাখাই সঠিক পথ। তবে স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা আদর্শ মাত্রায় না পৌঁছালে বুন্দেসওয়ার প্রয়োজন অনুযায়ী তরুণদের বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

নতুন নিয়মে ২০২৬ সাল থেকে সকল ১৮ বছর বয়সী পুরুষকে একটি প্রশ্নপত্র পূরণ করতে হবে, যেখানে তাদের শারীরিক সক্ষমতা ও সামরিক সেবায় ইচ্ছার বিষয়টি যাচাই করা হবে। নারীদের জন্য অংশগ্রহণ স্বেচ্ছামূলক থাকছে। ২০২৭ সালের জুলাই থেকে বছরে প্রায় ৩ লাখ তরুণের শারীরিক পরীক্ষা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী নির্বাচন করা হবে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিস্তোরিয়াস বলেন, নতুন ক্যারিয়ার সেন্টার হবে আগের মতো কঠোর নয়—বরং আরও আধুনিক, উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়। লক্ষ্য—তরুণদের সেনাবাহিনীর প্রতি আগ্রহ বাড়ানো। তবে সিদ্ধান্তটি নিয়ে দেশে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিরোধী দল পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধিরাও উদ্বেগ জানাচ্ছে যে সরকার কি তাদের দায়িত্ব ঠিকভাবে নিচ্ছে?

জার্মানির এই পদক্ষেপ ইউরোপের নর্ডিক দেশগুলোকে অনুসরণ করেই নেওয়া হয়েছে, যেখানে আকর্ষণীয় সুবিধা দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমকে জনপ্রিয় করা হয়েছে এবং ভাল ফলও মিলেছে।