এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর, ২০২৫, ০৪:১১ পিএম

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নতুন করে চাঙা হয়ে উঠেছে দিল্লি ও ইসলামাবাদে টানা দুটি প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের পর। গত সোমবার দিল্লির লালকেল্লার কাছে একটি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ১৩ জন নিহত হন, আহত হন আরও অনেকে। তার মাত্র একদিন পরই ইসলামাবাদ কেঁপে ওঠে আরেক বিস্ফোরণে—যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ‘আত্মঘাতী বোমা হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এতে ১২ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন আরও ৩০ জন।
মাসের শুরুতেই দুই প্রতিবেশী রাজধানীতে এমন ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলেছে। দুই দেশই দ্রুত উদ্ধার কাজ শুরু করে, নিরাপত্তা বাড়ায় এবং পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিস্ফোরণের ধরন, সময় এবং লক্ষ্যবস্তু দেখে তদন্তকারীরা ধারণা করছেনএগুলো ছিল পরিকল্পিত হামলা, কোনোভাবেই দুর্ঘটনা নয়।
ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিযোগিতার কেন্দ্র এখন অনেকটাই আফগানিস্তানকে ঘিরে। আফগান–পাকিস্তান সীমান্তে চলমান সংঘর্ষের মধ্যেই দিল্লি ও ইসলামাবাদে এই হামলার ঘটনা ঘটে, যা দুই দেশের মধ্যে বৈরিতা আরও বাড়ানোর আশঙ্কা তৈরি করেছে।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার দাবি—তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) আফগান ভূখণ্ডে আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের অভিযোগ, সেখান থেকেই টিটিপি পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে। একই সঙ্গে তারা ভারতের দিকেও অভিযোগ তুলছে—পাকিস্তানের ভেতরে টিটিপি ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নাকি পরোক্ষভাবে মদদ দিচ্ছে ভারত।
ভারত ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি বহু বছর ধরেই একে অপরের সঙ্গে জড়িত। সীমান্ত সংঘর্ষ, সন্ত্রাসী হামলা থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণ—সবই দুই দেশের রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে।
ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি সোমবারের বিস্ফোরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে—সন্ত্রাস দমনে তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
দিল্লির বিস্ফোরণটি ভারত সরকার স্পষ্টভাবেই “সন্ত্রাসী হামলা” হিসেবে তদন্ত করছে। তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)—যারা সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত মামলার বিশেষজ্ঞ।
বিস্ফোরণের নেপথ্যে যারা আছে, তাদের খুঁজে বের করতে এনআইএ কঠোর সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগ করছে।
দিল্লি–ইসলামাবাদের এই দুই বিস্ফোরণ শুধু প্রাণহানি নয়—দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনার নতুন অধ্যায়ও লিখে দিয়েছে।