ঢাকা, সোমবার, নভেম্বর ১৭, ২০২৫ | ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
Logo
logo

অভূতপূর্ব বদল: কেন মার্কিন তরুণরা দ্রুত ইসরায়েল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে—জানুন আসল কারণ


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৫:১১ পিএম

অভূতপূর্ব বদল: কেন মার্কিন তরুণরা দ্রুত ইসরায়েল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে—জানুন আসল কারণ

ইসরায়েল–মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে কাজ করা এক বিশেষজ্ঞের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের তরুণদের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব—এবং এটিকে আর সাময়িক প্রতিক্রিয়া বলে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না।

শনিবার ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিয়ত আহরোনোথ-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে যুক্তরাষ্ট্র–ইসরায়েল সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ কোবি বার্দা লিখেছেন, মার্কিন যুবসমাজের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি অবিশ্বাস ও বিরোধিতা শুধু টিকে নেই, বরং তা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠিত এক প্রবণতায় রূপ নিয়েছে। এই ধারা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের অবস্থানকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।

ফার্স নিউজের তথ্য উদ্ধৃত করে পার্সটুডে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বড় কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক বিক্ষোভই দেখিয়ে দিয়েছে—এই প্রজন্ম কোন অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। আর এতেই ইসরায়েলের রাজনৈতিক মহল ও গণমাধ্যমে স্পষ্ট উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বার্দা লিখেছেন, এই পরিবর্তনকে আর ‘গাজা যুদ্ধের আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়া’ ভেবে ভুল করা যাবে না। বরং বোঝা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাব্যবস্থায় বহু বছর ধরেই এই মানসিক পরিবর্তনের ভিত ধীরে ধীরে তৈরি হয়েছে।

পরিবর্তনের উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন একটি ঘটনা, যা অধিকৃত অঞ্চলে বেশ আলোড়ন তুলেছিল—নিকি হ্যালির সন্তান নালিন হ্যালির একটি টুইট। জাতিসংঘে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং ইসরায়েলের কট্টর সমর্থক নিকি হ্যালির ছেলেই সেখানে ইসরায়েলিদের উদ্দেশে লেখেন:
“আপনারা যদি আমাদের সম্পর্ক বজায় রাখতে চান, তাহলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করা বন্ধ করতে হবে।”

বার্দার ব্যাখ্যায়, নিকি হ্যালির মতো ইসরায়েল–সমর্থকের সন্তানও যখন আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রচলিত স্লোগানের ভাষায় কথা বলে, তখন স্পষ্ট হয়—এই পরিবর্তন বহুদিনের পরিচয়–রাজনীতি ও সামাজিক ন্যায়ের প্রবাহের ফল, কেবল গাজার সাম্প্রতিক যুদ্ধকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া নয়।

তার বিশ্লেষণে আরও উঠে আসে, যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমিক বামপন্থী গোষ্ঠী ও বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের মাঝে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তৈরি হওয়া এক মতাদর্শিক জোটই এই নতুন রাজনৈতিক–সাংস্কৃতিক বয়ানকে শক্তিশালী করেছে।

এই ইহুদিবাদী লেখকের সতর্কবার্তা—এই প্রবণতা কেবল বামপন্থী গোষ্ঠীতে সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে যে বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তন এবং নতুন অর্থায়নের ধারা তৈরি হয়েছে, তার প্রভাবে আমেরিকার ডানপন্থী গোষ্ঠীর একাংশও এখন ইসরায়েল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

নিবন্ধটির শেষ অংশে বলা হয়, ইসরায়েলের শক্তিমত্তা এখন আর শুধু সামরিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই পরিমাপ করা যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের তরুণ প্রজন্মের মন ও চিন্তায় প্রভাব বিস্তারই আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ অবস্থান নির্ধারণের অন্যতম বড় উপাদান। এই ধারা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে—যেখান থেকে ফিরে আসা কঠিন, এমনকি অসম্ভব হয়ে উঠবে।