ঢাকা, মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৫ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
Logo
logo

আন্তর্জাতিক টেস্টের ভবিষ্যৎ কী? লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন অভিজ্ঞ অজি অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ!


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:১২ পিএম

আন্তর্জাতিক টেস্টের ভবিষ্যৎ কী? লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন অভিজ্ঞ অজি অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ!

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ অ্যাশেজের (Ashes) মাঝেই নিজের লাল বলের ক্রিকেট কেরিয়ার নিয়ে এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ (Mitchell Marsh)। খবর অনুযায়ী, মার্শ তাঁর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া (Western Australia) সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে সরে আসার পরিকল্পনা করেছেন। এই পদক্ষেপ তাঁর টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে।

মিচেল মার্শ ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট অভিষেক করেন। তিনি মোট ৪৬টি টেস্ট খেলেছেন এবং শেষবার ২০২৪ সালে মেলবোর্নে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। এই অলরাউন্ডার টেস্টে ২৮.৫৩ গড়ে ২,০৮৩ রান করেছেন এবং ৪০.৪১ গড়ে ৫১টি উইকেট নিয়েছেন। ২০২৩ সালের অ্যাশেজে হেডিংলিতে এক দুর্দান্ত সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তিনি টেস্ট দলে প্রত্যাবর্তন করেন।

অ্যাশেজ চলাকালীনই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চলেছেন মিচেল মার্শ
'নাইন নিউজপেপার্স'-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিচেল মার্শ তাঁর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া সতীর্থদের জানিয়েছেন যে এই শেফিল্ড শিল্ড মরসুমের (Sheffield Shield season) পরে তিনি আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলতে চান না। সম্প্রতি এমসিজিতে একটি ম্যাচে তিনি দুটি ছোট স্কোর করার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেন।

যদিও ঘরোয়া লাল বলের ক্রিকেট থেকে সরে এলেও মার্শ আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেট পুরোপুরি ছেড়ে দেননি। তিনি জানেন যে তিনি হয়তো আর সুযোগ নাও পেতে পারেন, তবে নির্বাচকরা যদি ভবিষ্যতে তাঁকে ডাকেন, এমনকি চলমান অ্যাশেজ সিরিজের জন্যেও ডাকেন, তবে তিনি খেলতে রাজি আছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মার্শ প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খুব কমই খেলেছেন; ২০১৯ সাল থেকে তিনি ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে মাত্র ৯ বার মাঠে নেমেছেন। এর আগে প্রকাশিত খবরেও বলা হয়েছিল যে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাশেজ পরিকল্পনার জন্য তাঁকে বিবেচনা করা হচ্ছে।

মিচেল মার্শের টেস্ট পরিকল্পনা নিয়ে কোচ ও নির্বাচকদের প্রতিক্রিয়া
অ্যাশেজ শুরু হওয়ার আগে প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে দলের প্রয়োজন হলে মিচেল মার্শ টেস্ট দলে আসতে পারেন। কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডও বলেছিলেন যে যদি মিচেল মার্শকে নেওয়া হলে টেস্ট দলের উপকার হবে বলে মনে হয়, তবে সাদা বলের ক্রিকেট থেকেও তাঁকে দলে নিতে অস্ট্রেলিয়া দ্বিধা করবে না।

নভেম্বরে বেইলি বলেছিলেন, "ওর এমন একটি গেম আছে যা দলের মধ্যে গতিময় পরিবর্তন আনতে পারে, এক ভিন্ন চেহারা দিতে পারে। আমরা সিরিজ শুরু করার জন্য সেই পথে যাচ্ছি না, তবে পরে কী হয়, তা দেখা যাবে।"

কোচ ম্যাকডোনাল্ড বলেছিলেন, “আমরা স্বচ্ছন্দেই কাউকে বেছে নিতে পারি—যদি আপনি নাম জানতে চান, তবে মিচ মার্শ, এমনকি সাদা বলের ক্রিকেট থেকেও। যদি আমরা মনে করি এটি টেস্ট দলের জন্য উপকারী হবে। তিনি সাদা বলের দলের অধিনায়ক। টেস্ট প্রস্তুতির জন্য তার পক্ষে সময় বের করা এবং ভারসাম্য বজায় রাখা খুব কঠিন, যদি সে টেস্টের উইন্ডোতে থাকে। আমরা এখনও মিচ মার্শের টেস্ট কেরিয়ার নিয়ে আশা ছাড়িনি।”

উপলব্ধ থেকেও মার্শের টেস্ট ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
মিচেল মার্শ অস্ট্রেলিয়ার সাদা বলের উভয় ফরম্যাটের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই থাকছেন। তবে লাল বলের ক্রিকেটে ক্যামেরন গ্রিন (Cameron Green) এবং বিউ ওয়েবস্টার (Beau Webster) তাঁর চেয়ে এগিয়ে আছেন, যা তাঁর টেস্ট একাদশে ফেরা কঠিন করে তুলেছে।

তাঁর শেফিল্ড শিল্ড ক্রিকেট থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তটি নির্বাচকদের জন্য ফর্ম বিচার করার প্রধান মঞ্চটিই সরিয়ে দিল। নিয়মিত প্রথম শ্রেণির পারফরম্যান্স ছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং গ্রুপে বেশ কয়েকজন ইনজুরিতে পড়লে তবেই মার্শ টেস্ট দলে আসতে পারবেন।

২০২৫ সালের শুরুতে মার্শ তাঁর জায়গা হারান বিউ ওয়েবস্টারের কাছে। অ্যাশেজের পর অজিরা আগস্টের আগে আর কোনো টেস্ট খেলবে না, যখন তারা বাংলাদেশের আতিথেয়তা দেবে। মার্শ পুরোপুরি দরজা বন্ধ করেননি, দলের হঠাৎ প্রয়োজন হলে তিনি খেলার জন্য নিজেকে উপলব্ধ রেখেছেন।