ঢাকা, শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ | ৫ পৌষ ১৪৩২
Logo
logo

তাঁবু ভেসে গেল, ভবন ধসে পড়ল—গাজায় ভয়াবহ বন্যায় ৩৭০ প্রাণহানি, বিশ্বজুড়ে তীব্র উদ্বেগ


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:১২ পিএম

তাঁবু ভেসে গেল, ভবন ধসে পড়ল—গাজায় ভয়াবহ বন্যায় ৩৭০ প্রাণহানি, বিশ্বজুড়ে তীব্র উদ্বেগ

গাজা উপত্যকায় সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় নবজাতক শিশুসহ অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই প্রাণহানিকে “সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য” আখ্যা দিয়ে এর জন্য সরাসরি ইসরায়েলের অবরোধ নীতিকে দায়ী করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, টানা ভারী বৃষ্টিতে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা শুধু খারাপ আবহাওয়ার ফল নয়। বরং গাজায় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো মেরামতের উপকরণ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞাই এই বিপর্যয়কে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের গবেষণা, অ্যাডভোকেসি, নীতি ও প্রচারণা বিভাগের সিনিয়র পরিচালক এরিকা গুয়েভারা রোসাস বলেন,
“দেয়ালে লেখাই ছিল—এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। গাজায় বন্যায় ডুবে যাওয়া তাঁবু আর ধসে পড়া ভবনের জন্য শুধু আবহাওয়াকে দায়ী করা যায় না। এটি ছিল একটি সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য ট্র্যাজেডি।”

তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য আশ্রয় ও মেরামতের উপকরণ ঢুকতে বাধা দেওয়ার ইসরায়েলি নীতির কারণেই এই মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।

অ্যামনেস্টি গাজায় ইসরায়েলি সামরিক কর্মকাণ্ডের কড়া নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে অবরোধ প্রত্যাহার, প্রয়োজনীয় পণ্য, মেরামত সামগ্রী ও মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাস্তুচ্যুতদের শিবির পানিতে তলিয়ে যায় এবং যুদ্ধের কারণে আগে থেকেই দুর্বল হয়ে পড়া বহু ভবন ধসে পড়ে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর মাত্র দুই সপ্তাহ বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয় হাইপোথার্মিয়ায়।

বর্তমানে গাজায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করছে, যাদের বেশিরভাগই তাঁবুতে আশ্রিত। গত সপ্তাহে উপত্যকার কিছু অংশে ৯ ইঞ্চিরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করে।

আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বারবার আরও বেশি মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি চাইলেও অভিযোগ রয়েছে, ইসরায়েল অধিকাংশ প্রয়োজনীয় সহায়তা আটকে রেখেছে। ইসরায়েলি সামরিক পরিসংখ্যানেই দেখা যায়, যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক সহায়তা প্রবেশের লক্ষ্য পূরণ হয়নি—যদিও ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি থাকা সত্ত্বেও উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে। যুদ্ধবিরতির পর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাবে গাজায় ৩৭০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।