এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম

গাজা উপত্যকায় গত ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর থাকা সাময়িক যুদ্ধবিরতি এখন বড় সংকটে পড়েছে। নতুন করে পাওয়া তথ্য বলছে, ইসরাইল আবারও গাজায় ব্যাপক সামরিক আগ্রাসন শুরু করার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। এ নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে একটি বিশেষ বৈঠকও সেরে ফেলেছেন।
ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘কান’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অবস্থানে সম্ভাব্য পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখেই নতুন করে যুদ্ধের পথ খুঁজছে তেল আবিব।
মূলত ওয়াশিংটনকে ঘিরেই ইসরাইলি গোয়েন্দা ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সম্পৃক্ততা কমিয়ে আনতে পারে। এমনকি গুঞ্জন রয়েছে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহু সরকারের মতামত উপেক্ষা করেই নিজস্ব শান্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে পারেন।
এই পরিস্থিতিতে ইসরাইল মনে করছে, রাজনৈতিক উদ্যোগগুলো যদি ব্যর্থ হয় বা যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তাদের বিপক্ষে চলে যায়, তাহলে গাজায় আবার পূর্ণ শক্তিতে সামরিক অভিযান শুরু করা ছাড়া বিকল্প থাকবে না।
বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে কারণ আগামী ২৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নেতানিয়াহুর একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই বৈঠকের ঠিক আগে যুদ্ধ মন্ত্রিসভার এমন তৎপরতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অন্যদিকে, শান্তি আলোচনার অংশ হিসেবে শুক্রবার মিয়ামিতে তুরস্ক, কাতার ও মিশরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। সেখানে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরবর্তী ধাপ এবং গাজার স্থায়ী সমাধান নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। তবে ইসরাইলের কড়া ও আগ্রাসী অবস্থান পুরো শান্তি প্রক্রিয়াকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।
নতুন করে সামরিক আগ্রাসন শুরু হলে গাজার মানবিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে—তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এমনকি ইসরাইলের ভেতরেও কট্টরপন্থী নেতারা প্রকাশ্যে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে কথা বলছেন, যা শান্তির পথকে আরও জটিল করে তুলছে।
সব মিলিয়ে সামনে মিয়ামি ও ফ্লোরিডার বৈঠকগুলোই স্পষ্ট করে দেবে—গাজায় শান্তির আলো জ্বলবে, নাকি আবারও আকাশ ভরে উঠবে যুদ্ধের ধোঁয়ায়।