ঢাকা, শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫ | ৫ পৌষ ১৪৩২
Logo
logo

গাজা যুদ্ধের পর কী হবে? গ্যাসের আয়েই পুনর্গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে গোপনে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল-আমিরাত


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম

গাজা যুদ্ধের পর কী হবে? গ্যাসের আয়েই পুনর্গঠনের পরিকল্পনা নিয়ে গোপনে কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল-আমিরাত

গাজা উপত্যকা যুদ্ধের পর কীভাবে পুনর্গঠন করা হবে—এ নিয়ে এখন বড় সব পরিকল্পনা হচ্ছে। সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত গ্যাসক্ষেত্র থেকে পাওয়া আয় ব্যবহার করে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকার পুনর্গঠন করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গোপনে আলোচনা করেছে। লন্ডনভিত্তিক মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-কে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন এক সাবেক পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং বর্তমানে দায়িত্বে থাকা এক পশ্চিমা ও এক আরব কর্মকর্তা।

সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, এই আলোচনা একাধিক পথে হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রস্তাবে বলা হয়েছে—আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডনক) গাজার এখনো পুরোপুরি ব্যবহৃত না হওয়া গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মালিকানায় অংশ নেবে। এরপর সেই গ্যাস বিক্রি করে যে বিপুল অর্থ আসবে, তা গাজার পুনর্গঠন কাজে ব্যয় করা হবে।

তবে আলোচনাগুলো এখনো একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষরের আগেই যুক্তরাষ্ট্র গাজার যুদ্ধোত্তর যে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল, সেগুলোর মতো এখানেও এখনো কোনো চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। সাবেক ওই পশ্চিমা কর্মকর্তা জানান, গত ডিসেম্বরে গাজার গ্যাস থেকে আয় করার বিষয়টি আবার নতুন করে আলোচনায় আসে।

২০০০ সালে গাজার উপকূলীয় সমুদ্র এলাকায় গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। এই গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের অধিকার বর্তমানে দুটি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে—ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সার্বভৌম তহবিল প্যালেস্টাইন ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম এবং কনসোলিডেটেড কন্ট্রাক্টরস কোম্পানি। এটি একটি নির্মাণ ও জ্বালানি খাতের বড় প্রতিষ্ঠান, যার মালিক গ্রিসভিত্তিক এক প্রবাসী ফিলিস্তিনি পরিবার।

এই প্রকল্পের প্রায় ৪৫ শতাংশ মালিকানা একজন আন্তর্জাতিক অংশীদারের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলা ও পরবর্তী যুদ্ধ শুরুর আগে মিসর এই অংশীদারিত্বে যুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, জাতিসংঘ এই চলমান যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের গ্যাস বিশেষজ্ঞ এবং 'দ্য গাজা মেরিন স্টোরি' বইয়ের লেখক মাইকেল ব্যারন বলেন, "এই প্রকল্পটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।"

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গাজার পূর্ণ পুনর্গঠন করতে প্রয়োজন প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার—যা গ্যাস প্রকল্প থেকে আসা সম্ভাব্য আয়ের তুলনায় অনেক বেশি। তবে বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল গাজাকে পুরোপুরি পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে না। বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের ঘনিষ্ঠ কিছু মার্কিন প্রতিনিধি ইসরায়েল-অধিকৃত গাজার প্রায় অর্ধেক এলাকায় অস্থায়ী আবাসন তৈরির একটি সীমিত পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।