এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:১২ পিএম

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএসআইএস)-এর একের পর এক লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের সামরিক হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মার্কিন সেনাদের ওপর হামলার জবাব হিসেবেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট সিরিয়ায় আইএসআইএস সন্দেহভাজনদের লক্ষ্য করে নিয়মিত বিমান হামলা ও স্থল অভিযান চালিয়ে আসছিল। এসব অভিযানে অনেক সময় সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীও অংশ নিয়েছে।
গত সপ্তাহে সিরিয়ায় সন্দেহভাজন আইএসআইএস হামলায় এক মার্কিন সেনা নিহত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কঠোর প্রতিশোধের ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার ধারাবাহিকতায় এবার চালানো হলো এই বড় পরিসরের হামলা।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানান, এই অভিযানে আইএসআইএস যোদ্ধা, তাদের ঘাঁটি, অবকাঠামো ও অস্ত্রভাণ্ডারকে সরাসরি লক্ষ্য করা হয়েছে। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন হকআই স্ট্রাইক’।
তিনি বলেন, “এটি নতুন কোনো যুদ্ধের শুরু নয়—এটি প্রতিশোধ। আজ আমরা আমাদের শত্রুদের খুঁজে বের করে হত্যা করেছি, এবং এই অভিযান চলবে।”
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, সিরিয়ার সরকার এই হামলাগুলো পুরোপুরি সমর্থন করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র খুবই শক্ত অবস্থান থেকে প্রতিশোধ নিচ্ছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, মধ্য সিরিয়াজুড়ে ৭০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। অভিযানে এফ-১৫ ও এ-১০ যুদ্ধবিমান, অ্যাপাচি হেলিকপ্টার এবং হিমার্স রকেট সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিরিয়া তার দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে এবং নিশ্চিত করবে যেন দেশটির ভূখণ্ডে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর কোনো নিরাপদ আশ্রয় না থাকে।
বর্তমানে সিরিয়ায় প্রায় এক হাজার মার্কিন সেনা অবস্থান করছে। দেশটির রাজনৈতিক বাস্তবতাও বদলে গেছে। ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর গত বছর সাবেক বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে নতুন সরকার গঠন করে। এই সরকারে সিরিয়ার সাবেক আল-কায়েদা শাখার সদস্যরাও রয়েছেন, যারা পরে সংগঠনটি ছেড়ে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্ত হয়।
ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই সহযোগিতা করছে। গত মাসে প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার হোয়াইট হাউজ সফরের সময় এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটি সমঝোতাও হয়।