এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:১২ পিএম

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের ঐতিহাসিক বিশ্বকাপ জয়ের পর এবার বড় পুরস্কার নিয়ে এলো BCCI। ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের এপেক্স কাউন্সিল বৈঠকে মহিলা ঘরোয়া ক্রিকেটার ও অফিসিয়ালদের ম্যাচ ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটিকে মহিলা ক্রিকেটের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলা হচ্ছে।
মহিলা ক্রিকেটের শুরুতে আর্থিক সংকট ছিল চরমে। তখন Women’s Cricket Association of India-র তত্ত্বাবধানে চলত সবকিছু, খেলোয়াড়দের পাওনা ছিল নামমাত্র। ২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে পৌঁছানোর পরও সরকারি সহায়তা ছিল খুবই কম।
মহিলা ক্রিকেট BCCI-র অধীনে আসার পর থেকে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। প্রথমবারের মতো খেলোয়াড়রা পেলেন কেন্দ্রীয় চুক্তি ও ম্যাচ ফি। কিন্তু পুরুষ ক্রিকেটারদের তুলনায় সেই আয় ছিল অনেকটাই কম। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০—সব ফরম্যাটেই কম পারিশ্রমিক পেতেন নারীরা। আর ঘরোয়া ক্রিকেটারদের অবস্থা ছিল তার চেয়েও খারাপ, সুযোগ ও দৃশ্যমানতা দুই-ই কম ছিল।
২০২২ সালের অক্টোবরে BCCI সেই বৈষম্য দূর করে। তারা ঘোষণা দেয়, আন্তর্জাতিক ম্যাচে পুরুষ ও মহিলা ক্রিকেটাররা সমান ফি পাবেন। এরপর থেকে সব ফরম্যাটে সমান পারিশ্রমিক পেতে শুরু করেন মহিলা খেলোয়াড়রা। সিদ্ধান্তটিকে ঐতিহাসিক হিসেবে দেখা হয়, যা মহিলা ক্রিকেটকে শক্তিশালী করতে এবং নারী খেলোয়াড়দের মূল্যায়নে সমতার বার্তা দেয়।
কতটা বাড়ল ম্যাচ ফি?
ESPNcricinfo-র রিপোর্ট অনুযায়ী, BCCI-র এপেক্স কাউন্সিল সোমবারের বৈঠকেই এই বৃদ্ধি মঞ্জুর করে। নতুন কাঠামো অনুসারে, সিনিয়র মহিলা খেলোয়াড়রা (প্লেয়িং ইলেভেনে) এখন পাবেন দিনপ্রতি ৫০,০০০ টাকা। রিজার্ভ খেলোয়াড়রা পাবেন ২৫,০০০ টাকা, আগে যা ছিল মাত্র ১০,০০০ টাকা।
ঘরোয়া টি-২০ টুর্নামেন্টে প্লেয়িং ইলেভেনের সদস্যরা পাবেন দিনপ্রতি ২৫,০০০ টাকা এবং রিজার্ভরা পাবেন ১২,৫০০ টাকা। এজ-গ্রুপের খেলোয়াড়রা (ইলেভেনে) এখন পাবেন দিনপ্রতি ২৫,০০০ টাকা, রিজার্ভরা পাবেন ১২,৫০০ টাকা। আগে এটি ছিল যথাক্রমে ১০,০০০ ও ৫,০০০ টাকা।
এই সংশোধনের ফলে একজন এজ-গ্রুপ খেলোয়াড়ের মৌসুমি আয় বেড়ে এখন প্রায় ৫ লক্ষ টাকা হবে, যা আগে ছিল মাত্র ২ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। BCCI অফিসিয়ালদের মতে, একজন শীর্ষ সিনিয়র মহিলা ক্রিকেটার এখন সব ফরম্যাট মিলিয়ে পুরো ঘরোয়া মৌসুম খেলে আয় করতে পারবেন ১২ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা।
জুনিয়র পর্যায়ে আয় বাড়ার পেছনের কারণ
রিপোর্ট বলছে, জুনিয়র পর্যায়ে পারিশ্রমিক সংশোধনের চাপ এসেছে ব্যবস্থার ভিতর থেকেই। শীর্ষ রাজ্য কোচ ও খেলোয়াড়রা ট্যালেন্ট পুল বাড়ানোর জন্য এমন পরিবর্তনের অনুরোধ করেছিলেন। Women’s Premier League (WPL)-এর সাফল্য ও দৃশ্যমানতা তরুণ প্রতিভাদের আলোয় এনেছে। পাশাপাশি, টানা দুবার আন্ডার-১৯ মহিলা বিশ্বকাপ জয় কিশোরী খেলোয়াড়দের মধ্যে আগ্রহ আরও বাড়িয়েছে।