ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও বিস্তারিত তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ভারত। বার্তাসংস্থা পিটিআই জানায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় তাকে ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের গভীর ও স্বচ্ছ তদন্ত নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়।

পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে—এমন অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের অভিযোগ দুই দেশের সম্পর্কের জন্য স্পর্শকাতর, তাই নিরপেক্ষ তদন্ত অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে ওসমান হাদি নিহত হওয়ার পর ভারতের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে তার মৃত্যুর পর বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব বাড়ছে বলেও দাবি করেছে পিটিআই।

এদিকে, এর আগেই মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশ সরকার। পররাষ্ট্রসচিব নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়েও জোর দেন তিনি।

এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বরও প্রণয় ভার্মাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। সেদিন ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে সরকারের উদ্বেগ জানানো হয়। একই সঙ্গে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ও ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীরা যাতে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়।

অন্যদিকে, গত ১৭ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাল্টা তলব করা হয়। এরপর এক সপ্তাহ না যেতেই মঙ্গলবার আবারও তাকে তলব করল ভারত। টানা এই কূটনৈতিক তৎপরতা দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।