ঢাকা, বুধবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৫ | ১০ পৌষ ১৪৩২
Logo
logo

রমজানে কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে পৌনে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম

রমজানে কৃত্রিম সংকট ঠেকাতে পৌনে ৫ কোটি লিটার ভোজ্যতেল কিনছে সরকার

আসন্ন পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট রোধে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৩ কোটি ৭৫ লাখ লিটার এবং স্থানীয়ভাবে এক কোটি লিটার ভোজ্যতেল কেনা হবে। পাশাপাশি বাজার স্থিতিশীল রাখতে ১০ হাজার টন মসুর ডালও সংগ্রহ করা হচ্ছে। ভোজ্যতেল কিনতে ব্যয় হবে ৬৪২ কোটি ৪৫ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ টাকা এবং ডাল কিনতে লাগবে ৭২ কোটি ২০ লাখ টাকা। এসব পণ্য ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর মাধ্যমে বিক্রি করা হবে।

সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে নাইজেরিয়া থেকে আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২ কোটি লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, রমজানে বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়ানো ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে এই তেল কেনা হচ্ছে। এ জন্য নাইজেরিয়ার ভিডক ফার্মস অ্যান্ড এক্সপোর্টস লিমিটেডের কাছে দরপ্রস্তাব চাওয়া হলে প্রতিষ্ঠানটি প্রস্তাব জমা দেয়।

টিইসি দরপ্রস্তাব যাচাই করে তা রেসপনসিভ হিসেবে গ্রহণ করে। সব প্রক্রিয়া শেষে ভিডক ফার্মস অ্যান্ড এক্সপোর্টস লিমিটেড (উৎস: ব্রাজিল) থেকে ২ কোটি লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ২৪২ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

দুই লিটার পেট বোতলে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ধরা হয়েছে ১২১ টাকা ৩২ পয়সা। টিসিবির গুদাম পর্যন্ত অন্যান্য খরচসহ প্রতি লিটার তেলের দাম পড়বে ১৫০ টাকা ৩৪ পয়সা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই তেল সরকার নির্ধারিত খোলা বাজার দামের চেয়ে কম দামে, তবে ক্রয় মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হবে। ফলে কোনো ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির স্টুয়ার্ট ক্লোবানু গেরহার্ড থেকে আন্তর্জাতিকভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এক কোটি ২৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই তেলও একই নীতিতে বিক্রি করা হবে।

টিইসির যাচাই শেষে স্টুয়ার্ট ক্লোবানু গেরহার্ড (উৎস: তানজানিয়া) থেকে এক কোটি ২৫ লাখ লিটার পরিশোধিত সয়াবিন তেল ১৬৫ কোটি ৮৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখানে প্রতি লিটার তেলের দাম চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত ১৩২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং গুদাম পর্যন্ত ১৬৪ টাকা ১১ পয়সা ধরা হয়েছে।

এদিকে মালয়েশিয়ার সি মিলেনিয়াম ট্রেড এসডিএন ডট বিহাড থেকে আরও ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৬ কোটি ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রতি লিটার তেলের দাম গুদাম পর্যন্ত পড়বে ১৬৩ টাকা ৩৭ পয়সা।

স্থানীয় বাজার থেকেও এক কোটি লিটার পরিশোধিত রাইস ব্রান তেল কেনা হচ্ছে। উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গাইবান্ধার প্রধান অয়েল মিলস, ঢাকার গ্রিন অয়েল অ্যান্ড পোলট্রি ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড থেকে মোট এক কোটি লিটার তেল ১৬৭ কোটি ৯০ লাখ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতি লিটার দাম ধরা হয়েছে ১৬৭ টাকা ৯০ পয়সা।

এছাড়া স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১০ হাজার টন মসুর ডাল কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি কেজি ডালের দাম ধরা হয়েছে ৭২ টাকা ২০ পয়সা। খুলনার জয়তুন অটো রাইস অ্যান্ড ডাল মিলস লিমিটেড থেকে এই ডাল সংগ্রহ করা হবে।