এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:১২ পিএম

ইরানের সঙ্গে নতুন করে যেকোনো সামরিক সংঘাতে জড়ালে ইসরায়েল ভয়াবহ বিপদের মুখে পড়তে পারে—এমন সতর্কবার্তা দিয়েছেন দেশটির এক শীর্ষ সামরিক কৌশলবিদ।
তার মতে, ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে নতুন যুদ্ধ শুরু হলে তা শুধু সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, বরং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সাধারণ জনগণের জন্যও নজিরবিহীন পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
ইসরায়েলি প্রভাবশালী দৈনিক হারেতজ–এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক ইসরায়েলি জেনারেল ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কৌশলবিদ আইজ্যাক ব্রিক এ বিষয়ে কড়া সতর্কতা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা গত কয়েক বছরে ব্যাপকভাবে বেড়েছে, অথচ ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি ও বারবার সংঘাত সামাল দেওয়ার ক্ষমতা হারাচ্ছে।”
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইজ্যাক ব্রিক মনে করেন, ইরানের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালিয়ে ইসরায়েল বড় ধরনের ঝুঁকি নিয়েছে। তার ভাষায়, “এ ধরনের পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও বড় ও ভয়াবহ পাল্টা হামলার পথ খুলে দিতে পারে।”
ব্রিক জানান, সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় ইরান ইসরায়েলের দিকে শত শত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের বড় একটি অংশ ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটি এবং গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, ইরান শুধু প্রতিরোধ নয়, প্রয়োজনে বড় পরিসরে আঘাত হানার সক্ষমতাও অর্জন করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয় দেশের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত আশঙ্কাজনকভাবে কমে এসেছে। ব্রিকের দাবি, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তেল আবিবকে জানিয়ে দিয়েছে—ভবিষ্যতে কোনো বড় সংঘর্ষ হলে তারা আগের মতো একই মাত্রায় প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে পারবে না।
এই পরিস্থিতিকে ইসরায়েলের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এতে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্রন্ট আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। বিশেষ করে জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলো বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”
সব মিলিয়ে সাবেক এই ইসরায়েলি জেনারেলের মতে, ইরানের সঙ্গে নতুন যুদ্ধ শুধু সামরিক হিসাবের বিষয় নয়—এটি ইসরায়েলের অস্তিত্ব, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।