এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:১২ পিএম

প্রকাশ্যে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গোপন সংঘাত থেমে নেই। গত জুনে ১২ দিনের সরাসরি যুদ্ধের পর ইসরাইলের বিরুদ্ধে এবার সাইবার জগতে সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে ইরান—এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে একটি হিব্রু ভাষার প্রযুক্তি বিষয়ক ম্যাগাজিন।
'পিসি ম্যাগাজিন' নামের এই সংবাদমাধ্যম তাদের বুধবারের প্রতিবেদনে জানায়, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির দেশের হ্যাকার দল ইসরাইলের শাসনব্যবস্থা বা 'জায়নিস্ট শাসন'-এর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী সাইবার আক্রমণ চালিয়েছে।
সাইবার যুদ্ধের নতুন মাত্রা:
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাইবার যুদ্ধ নতুন নয়। গত তিন বছর ধরে এ সংঘাত চলছে, যার মধ্যে রয়েছে নাশকতামূলক হামলা, গোয়েন্দা তৎপরতা এবং জনমত প্রভাবিত করার অপারেশন। তবে জুন মাসে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানি সাইবার হামলার সংখ্যা ও তীব্রতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
ইরানি হ্যাকাররা কতটা শক্তিশালী?
পিসি ম্যাগাজিন দাবি করে, ইরানি হ্যাকাররা খুব দ্রুত নিজেদের কৌশল বদলাতে পারে এবং নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে কার্যকর হামলা চালাতে সক্ষম। জুন মাসে ইসরাইলি 'সিস্টেমের' বিরুদ্ধে সাইবার হামলার সংখ্যা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। এসব হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছোট ও মাঝারি আকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
কে ছিল লক্ষ্য?
হ্যাকারদের মূল টার্গেট ছিল আইন প্রতিষ্ঠান (ল ফার্ম), নির্মাণ কোম্পানি, মানবসম্পদ পরামর্শক সংস্থা এবং লজিস্টিকস সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। পাশাপাশি কাস্টমস ক্লিয়ারিং কোম্পানি এবং যোগাযোগ অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের নিশানায় ছিল। কিছু প্রতিষ্ঠান 'দখল' করারও দাবি করা হয়েছে।
এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এটি স্পষ্ট হবে যে চলতি বছরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সাইবার হামলায় শীর্ষে রয়েছে ইরান। এই দাবি আরও তাৎপর্যপূর্ণ কারণ, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সাইবার নিরাপত্তায় বিশ্বনেতা হিসেবে দাবি করে আসছে।
সব মিলিয়ে:
প্রকাশ্যে যুদ্ধ না থাকলেও ইসরায়েল-ইরান সংঘাত যে নতুন ও বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছেছে, সাইবার জগতের এই রক্তহীন কিন্তু মারাত্মক লড়াই তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাইবারস্পেস এই দুই শত্রু দেশের লড়াইয়ের নতুন ও ভয়াবহ ময়দান হয়ে উঠছে।