এনবিএস ওয়েবডেস্ক প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:১২ পিএম

বৈদেশিক নীতিতে বাংলাদেশর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তুলনায় সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার অবস্থান ছিল দেশের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার দিকে সর্বাধিক গুরুত্বপ্রদত্ত। মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি অনলাইন এ মন্তব্য প্রকাশ করেছে।
এনডিটিভি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী; তিনি ১৯৯১-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ পর্যন্ত দুইবার পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন হিসেবেও তিনি দীর্ঘ সময় দেশের রাজনীতিতে প্রভাবশালী ছিলেন। ১৯৯১ সালে গণভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থাকে সংসদীয় ব্যবস্থায় পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার বৈদেশিক নীতিতে মৌলিক পার্থক্য ছিল, বিশেষ করে ভারতের বিষয়ে। যদিও খালেদা জিয়াকে ভারতের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখলেও, তিনি দেশের সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে সতর্ক ও কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবাদী অবস্থান বজায় রেখেছিলেন।
উদাহরণস্বরূপ, খালেদা জিয়া ভারতের ট্রানজিট ও স্থলপথ সংযোগ নিয়ে স্থায়ী বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি যুক্তি দেখিয়েছিলেন, ভারতীয় ট্রাকদের বাংলাদেশি রাস্তায় ব্যবহার দিলে এটি দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করবে। এছাড়া, ১৯৭২ সালের ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তির নবায়নেও তিনি বিরোধিতা করেছিলেন।
খালেদা জিয়ার ভারতবিরোধী নীতি শুধু ট্রানজিট বা বাণিজ্য সীমাবদ্ধতায় সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি ভারতের ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তা পানি চুক্তি ও অন্যান্য অবকাঠামোর বিষয়েও কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন। ২০০২ সালে ভারতকে উপেক্ষা করে চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন করা তার কৌশলগত অবস্থানের পরিচায়ক।
বিএনপিকে ‘বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষক’ হিসেবে তুলে ধরে খালেদা জিয়া ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা নীতি তৈরি করেছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ও চুক্তি তিনি কৌশলগতভাবে পরিচালনা করেছিলেন। তবে, কখনও উত্তেজনা পুরোপুরি কমেনি। ২০১৬-২০২৪ সালের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে তার বক্তব্য ও নীতি দেশের স্বার্থ রক্ষার সঙ্গেই সংযুক্ত ছিল।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য অবনতির পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি একবার বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের জনজীবনে খালেদা জিয়ার দীর্ঘ অবদানের কারণে উদ্বিগ্ন।