ঢাকা, বুধবার, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫ | ১৭ পৌষ ১৪৩২
Logo
logo

গাজায় মানবিক সংকটে আঘাত, ইসরায়েল ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম স্থগিত করছে


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:১২ পিএম

গাজায় মানবিক সংকটে আঘাত, ইসরায়েল ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম স্থগিত করছে

গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে কাজ করা ৩৭টি ত্রাণ সংস্থার কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন নিবন্ধন নীতিমালার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় এসব সংস্থার অনুমোদন বাতিল করা হচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে অনুমোদন স্থগিত হবে এবং সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে হবে। বন্ধ তালিকায় আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত কয়েকটি মানবিক সংস্থাও রয়েছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের সম্পূর্ণ ও যাচাইযোগ্য ব্যক্তিগত তথ্য জমা দেয়নি। তাদের মতে, এই তথ্য না থাকলে মানবিক সহায়তার মধ্যে সন্ত্রাসী অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব নয়।

এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, নতুন নিয়মগুলো অতিরিক্ত কঠোর ও অগ্রহণযোগ্য। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হলে গাজায় স্বাস্থ্যসেবাসহ জরুরি মানবিক সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজায় মানবিক পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েল সরকারের উচিত মানবিক সংস্থাগুলোকে ধারাবাহিক ও নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করার সুযোগ দেওয়া।

ইসরায়েলি মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ ব্যাহত হবে না। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, জাতিসংঘ, দ্বিপাক্ষিক অংশীদার এবং অনুমোদিত অন্যান্য মানবিক চ্যানেলের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম চলমান থাকবে।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, যেসব সংস্থার লাইসেন্স বাতিল করা হচ্ছে, তাদের একটি বড় অংশ বর্তমান যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করেনি। অতীতে এসব সংস্থার সম্মিলিত অবদান মোট সহায়তার খুব সামান্য অংশ ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে।

এর আগে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে কাজ করা জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত মানবিক ফোরাম সতর্ক করে জানিয়েছিল, নতুন নিবন্ধন ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর কার্যক্রমকে গুরুতর ঝুঁকির মুখে ফেলতে পারে। তাদের মতে, এই ব্যবস্থা অস্পষ্ট, ইচ্ছামতো প্রয়োগযোগ্য এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। ফলে অনেক মানবিক সংস্থা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতির সঙ্গে সংঘর্ষে পড়তে বাধ্য হবে।

বর্তমানে গাজায় মাঠ হাসপাতাল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জরুরি আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশন সেবা, অপুষ্ট শিশুদের পুষ্টি কেন্দ্র এবং মাইন অপসারণ কার্যক্রমের বড় একটি অংশ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো পরিচালনা বা সহায়তা করছে।