ঢাকা, শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০
Logo
logo

বিকিনি বিতর্কের প্রতিবাদে মুখর নেটদুনিয়া, সাঁতার পোশাকে ছবি পোস্ট করলেন বিশিষ্টরাও


এনবিএস ওয়েবডেস্ক   প্রকাশিত:  ১৪ আগস্ট, ২০২২, ১১:০৮ এএম

বিকিনি বিতর্কের প্রতিবাদে মুখর নেটদুনিয়া, সাঁতার পোশাকে ছবি পোস্ট করলেন বিশিষ্টরাও

বিকিনি বিতর্কের প্রতিবাদে মুখর নেটদুনিয়া, সাঁতার পোশাকে ছবি পোস্ট করলেন বিশিষ্টরাও

 শেষ শ্রাবণে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিকিনি (Bikini) ঝড়। মুহুর্মুহু ছবি উপচে পড়ছে। স্বল্প বসনা হয়ে ছবি দিচ্ছেন অনেকেই। হ্যাশ ট্যাগে লেখা হচ্ছে ‘টেক দ্যাট জেভিয়ার্স (Take That Xavier’s)।’ কারও ছবিতে সাঁতার পোশাক ছুঁয়ে যাচ্ছে অকূলপাথারের জলরাশি, কেউ বা শোবার ঘরেই সুইমস্যুট পরে ছবি তুলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে এমন ছবি দিয়ে সোজাসাপটা ঘোষণা করেছেন, “আমার দেহ আমার অধিকার। কে কী পোশাক পরবে তা ঠিক করে দেওয়ার ক্ষমতা কারও নেই।”

স্বল্প পোশাক পরার জন্য সেন্ট জেভিয়ার্সের অধ্যাপকের উপর নেমে এসেছে খাঁড়া। পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। আলোর থেকেও দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে সেই খবর। মধ্যবিত্তর বসার ঘরেও এখন আলোচনার বিষয়বস্তু একটাই। “শুধুমাত্র স্বল্প পোশাক পরে ছবি দেওয়ার জন্য চাকরি চলে যাবে?” এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত কেউ স্বল্প পোশাকে ছবি দিতে পারেন না। তাতে নাকি প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানি হয়।

নারীরা তো বটেই। এহেন যুক্তিতে চোখ কপালে তুলেছেন পুরুষরাও। নারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁরাও সরব সেন্ট জেভিয়ার্সের (St. Xavier’s) বিরুদ্ধে। তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মী শমীন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় খালি গায়ে নেমেছেন সুইমিং পুলে। সে ছবি নেটমাধ্যমে দিয়েছেন। লিখেছেন, “সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এটা আমার প্রতিবাদ। পোশাক ফতোয়া বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ছবি-প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষিকা কনীনিকা দে। জ্যোতির্ময়ী পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকার বক্তব্য, “একজন শিক্ষাদাতা হিসাবে সবসময় সজাগ থাকি। ছাত্র-ছাত্রীরা যেন আমার থেকে ভুল কিছু না শেখে। তাই বলে সাঁতার পোশাক পরব না? নিজের সাঁতার পোশাক পরিহিত ছবি দিয়ে কনীনিকার পালটা প্রশ্ন, “জলে কি শালমুড়ি দিয়ে নামলে ঠিক হত?”

অভিনেত্রী গুলশানারা খাতুনের প্রতিবাদ-ছবিতে স্পষ্ট বক্ষ বিভাজিকা। গুলশানারার লেখায়, “কেউ বলছেন, স্বল্পবসনা নারী শরীরের ছবি নাকি তাঁদের প্রতিষ্ঠানের সুনামের বিরুদ্ধে। তাতে নাকি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়। আমি কিন্তু নিজের পছন্দের জামাকাপড় পরতেই পছন্দ করি।” শুধু ছবি নয়, বাক্যবাণেও জেভিয়ার্সকে বিঁধেছেন সেলেবরা। মীর আফসার আলির টিপ্পনি, “কলেজে পড়তে আমার ইংলিশ শুনে অনেকেই বলতেন জেভিয়ার্স? আমি বলতাম না বে… উমেশচন্দ্র।” এমনকী, অনেকে উপাচার্য ফেলিক্স রাজকে ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও ‘অশিক্ষিত’ বলে দেগেছেন। “সেন্ট জেভিয়ার্স যে পশ্চাদগামী চিন্তাধারা নিয়ে চলেছে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠুন। সোশ্যাল মিডিয়া সাঁতার পোশাকের ছবিতে ভেসে যাক”, বার্তা দেন অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী।

গায়িকা পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “জীবনে এই প্রথম এরকম অনাবৃত সাহসী ছবি দেওয়ার দুঃসাহস করছি সোশ্যাল মিডিয়াতে। জানি না এটা কীভাবে গৃহীত হবে। তবে এটা অবশ্যই বলব যে আমাদের সমাজে সেন্ট জেভিয়ার্সের ঘটনাটা একটা মাইলস্টোন। চিন্তাধারার বদল আনতে হয়তো কিছুটা হলেও সাহায্য করবে।”

সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় আবার বিকিনি পরা ছবি দিয়ে লিখেছেন, “কাঁচকলা। কাঁচকলা। ব্যক্তি শিক্ষকের পোশাক ছাত্রছাত্রীদের কাছে বিড়ম্বনার বিষয় হয় না। এটি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় জানি। যে কর্তৃপক্ষ এটি বোঝে না তাদের শিক্ষার পরিধি বাড়ানো দরকার।সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে