চোটের কারণে দুই মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে থাকার পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং আক্রমণ দু’বার ধ্বংস করে দিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। প্রথম ম্যাচে ভারতকে বিপদ থেকে উদ্ধার, আর শেষ ম্যাচে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের পুরোপুরি শাসন—দুই ভূমিকাতেই ছিলেন হার্দিক।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে যেন ‘বিস্ট মোড’-এ নামেন হার্দিক পান্ডিয়া। আহমেদাবাদে ফিরেই নিজের পছন্দের মাঠে ব্যাট হাতে আগুন ঝরান তিনি। এই উইকেটে আগেও গুজরাট টাইটান্সের হয়ে বহু ইনিংস খেলেছেন হার্দিক, আর সেই অভিজ্ঞতার পুরো ব্যবহারই করেন।
বল ১ থেকেই আক্রমণাত্মক মুডে ছিলেন তিনি। মাত্র ১৮ বলে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম টি-টোয়েন্টি ফিফটি পূর্ণ করেন হার্দিক। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে আসে দুর্দান্ত ৬৩ রানের ইনিংস।
হার্দিকের দাপটে হতবাক ডেল স্টেইন
হার্দিক পান্ডিয়ার এই বিধ্বংসী ইনিংস মাঠে বসে দেখছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেস কিংবদন্তি ডেল স্টেইন। আর যা দেখলেন, তাতে তিনি রীতিমতো মুগ্ধ। তবে স্টেইনকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করেছে হার্দিকের শট নয়, বরং তার মানসিক দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাস।
জিওস্টারে কথা বলতে গিয়ে স্টেইন বলেন, হার্দিক যেন অন্য এক মানসিক স্তরে খেলেন। মাঠে তার উপস্থিতি অতুলনীয়। স্টেইনের মতে, হার্দিক এখন আর শুধু একজন ক্রীড়াবিদ নন—তিনি একেবারে ‘সুপারহিরো’ হয়ে উঠেছেন।
স্টেইন আরও বলেন, মাঠে হার্দিক যেভাবে নিজের কর্তৃত্ব দেখান, সেটা নিখাদ আধিপত্য। পাওয়ার হিটিং তার কাছে শুধু স্কিল নয়, এটা তার মানসিকতারই অংশ।
বুমরাহের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার কৌশল নিয়ে অসন্তুষ্ট স্টেইন
হার্দিকের প্রশংসার পাশাপাশি ডেল স্টেইন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের কৌশল নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে যশপ্রীত বুমরাহ ও বরুণ চক্রবর্তীর বিপক্ষে প্রোটিয়াদের রক্ষণাত্মক মানসিকতা তার একদমই পছন্দ হয়নি।
স্টেইনের মতে, ২৩๐ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুধু বুমরাহকে ‘বাঁচিয়ে খেলা’ কখনোই ভালো কৌশল হতে পারে না। বুমরাহ কুইন্টন ডি ককের উইকেট নেওয়ার পরই চাপ বাড়ে, আর তখন ছন্দে ফেরেন বরুণ চক্রবর্তী। এরপর দ্রুত ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডার।
স্টেইন বলেন, বুমরাহর প্রভাব শুধু উইকেটেই সীমাবদ্ধ নয়। তার চাপে পুরো ব্যাটিং লাইনআপ এলোমেলো হয়ে যায়। তাই এমন বোলারদের বিপক্ষেও ঝুঁকি নেওয়া উচিত ছিল।
বরুণ চক্রবর্তীর ভ্যারিয়েশনে মুগ্ধ ডেল স্টেইন
কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিনার বরুণ চক্রবর্তীর প্রশংসাতেও ছিলেন অকপট ডেল স্টেইন। মাঝের ওভারগুলোতে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা একেবারেই পড়তে পারেননি বরুণকে।
স্টেইনের মতে, বরুণের বোলিংয়ে রয়েছে অসাধারণ ভ্যারিয়েশন, ভিন্ন ভিন্ন রিলিজ পয়েন্ট, দুর্দান্ত লাইন-লেন্থ এবং চমৎকার গতির তারতম্য। দক্ষিণ আফ্রিকার মিডল অর্ডারে একমাত্র এইডেন মার্করামই কিছুটা বুঝতে পেরেছেন বরুণকে।
তবে বরুণ যখন নিজের লাইন-লেন্থে নিয়ন্ত্রণ নেন, তখন মার্করামও সতর্ক হয়ে যান—যেটাকে টি-টোয়েন্টির জন্য সবচেয়ে খারাপ মানসিকতা বলে মনে করেন স্টেইন। আহমেদাবাদের ম্যাচে বরুণ চক্রবর্তী নেন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।
