যুক্তরাষ্ট্রের মেইন উপসাগর পৃথিবীর অন্যান্য সমুদ্রের তুলনায় দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে গলদা চিংড়ি বা লবস্টার উৎপাদনের উপর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে প্রায় ২০০ কোটি ডলারের মৎস্যশিল্প ঝুঁকির মুখে।

গলদা চিংড়ির ওপর উষ্ণায়নের প্রভাব বোঝার জন্য উইলিয়াম অ্যান্ড মেরির ব্যাটন স্কুল এবং ভার্জিনিয়া ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সের গবেষকরা পাঁচ মাস ধরে গবেষণা করছেন। দেখা গেছে, অতিরিক্ত উষ্ণতা চিংড়ির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

গবেষণায় দেখা গেছে, চিংড়ির ভ্রূণ অ্যাসিডিফিকেশন সহ্য করতে পারে, কিন্তু উষ্ণ পানি তাদের বিপাকের হার বাড়িয়ে দেয়। এতে ডিমের বিকাশ দ্রুত হয়, কিন্তু লার্ভার আকার ছোট হয়। গবেষক ব্রিটানি জেলিসন বলেন, “আমেরিকান লবস্টার অত্যন্ত গতিশীল প্রাণী। এটি উপকূল থেকে গভীর সমুদ্রে যাওয়ার সময় অনেক পরিবর্তন সহ্য করতে পারে। তবে সমুদ্রের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অ্যাসিডিফিকেশন ও ঘন ঘন তাপপ্রবাহ চাপ সৃষ্টি করছে।”

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, শুধুমাত্র অ্যাসিডিফিকেশনের কারণে গলদা চিংড়ির জীবনযাত্রায় খুব বেশি প্রভাব পড়েনি। পিএইচ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তারা সহনশীল। কিন্তু উষ্ণ পানিতে ভ্রূণ অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে যায়, ফলে হৃৎস্পন্দন ও অক্সিজেন গ্রহণের হার বাড়ে। এনজাইমের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেলে ডিম ফুটে বের হওয়া লার্ভা আকারে ছোট হয়।

জেলিসন জানান, “চিংড়ি আংশিকভাবে অ্যাসিডিফিকেশন সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু উষ্ণ পানিতে জন্ম নেওয়া লার্ভার আকার ছোট হওয়ায় বন্য পরিবেশে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে।”

বর্তমানে মেইন উপসাগরের গলদা চিংড়ি উৎপাদন এখনও ভালো আছে। তবে দক্ষিণের নিউ ইংল্যান্ডের লবস্টার শিল্প ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে ধসে পড়েছে। উত্তর দিকেও একই ধরনের পতন হতে পারে।

 

news