স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা পদে থাকছেন না। গত মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ঠিকানায় 'ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন' অনুষ্ঠানে এসে তিনি এই তথ্য জানান। তার এই ঘোষণার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন গুঞ্জন – তবে কি নাহিদ ইসলামের মতো আসিফ মাহমুদও নির্বাচনের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন? তার কথায় তেমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে।

সরকার থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, "২০১৮ সাল থেকে আমি রাজনীতিতে যুক্ত। তাই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে সরে যাবো।" তিনি মনে করেন, মাহফুজ আলমসহ যারা বর্তমানে রাজনীতিতে সক্রিয়, তাদের নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয়। এর কারণ হিসেবে তিনি ব্যাখ্যা দেন যে, প্রধান উপদেষ্টা জাতিকে একটি সেরা নির্বাচন উপহার দিতে চান এবং এক্ষেত্রে 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট'-এর প্রশ্ন আসা উচিত নয়।

আসিফ মাহমুদের এই ঘোষণার আগে থেকেই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল যে, ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ ইসলাম সরকার থেকে সরে এসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-তে যোগ দিতে পারেন। তবে এই টকশোতে আসিফ মাহমুদ এনসিপিতে যোগ দেবেন কিনা তা পরিষ্কার করেননি। একইসঙ্গে, আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন কিনা, সে বিষয়েও তিনি স্পষ্ট কোনো মন্তব্য করেননি।

এর আগে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠনকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক কমিটির (জানাক) তৎকালীন কয়েকজন নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে, আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ঢাকার বাংলামোটরে রূপায়ণ সেন্টারে অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়। তবে এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, কার্যক্রম স্থগিত হওয়া গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অভ্যুত্থানের সামনের সারিতে ছিলেন। সেই সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন আখতার হোসেন, এবং নাহিদ ইসলাম ছিলেন সদস্য সচিব। আসিফ মাহমুদ ছিলেন ছাত্রশক্তির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক। তারা সকলেই ছাত্রশক্তি গঠনের পূর্বে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সেখান থেকে বেরিয়ে ২০২৩ সালে ছাত্রশক্তি গঠন করেন।

এদিকে, গুঞ্জন রয়েছে যে, আসিফ মাহমুদ কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনে ভোট করতে পারেন। এজন্য বিএনপি নেতা ও অতীতে এই আসন থেকে একাধিকবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদের সাথে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলেও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, "কেউ কেউ মনে করছেন তিনি মুরাদনগর থেকে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। এটা ঠিক নয়।" তিনি আরও বলেন, "আমি জাতীয়পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। সেক্ষেত্রে স্থানীয় স্তরে গিয়ে নির্বাচন করা, রাজনীতি করা সুবিধাজনক হবে না। জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে ঢাকা শহরই আমার জন্য সুবিধাজনক স্থান।"

এছাড়া, কুমিল্লার মুরাদনগরে মবের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড, শিক্ষক নিপীড়ন, চাঁদাবাজি— এসব ঘটনায় আসিফ মাহমুদের বাবা বিল্লাল হোসেন জড়িতদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে। আসিফ মাহমুদ এগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের 'অপপ্রচার' বলে দাবি করেছেন এবং এসবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন।

#AsifMahmud #BangladeshPolitics #Election #NCP #PoliticalNews #BreakingNews #Bangladesh

news