খুলনা বিভাগে বিদ্যুতের ২৫টি নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনসহ ক্রয় কমিটিতে ১৯ প্রস্তাব অনুমোদন 

বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। 

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)-এর বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পাঁচটি পৃথক প্রস্তাবে ৫টি লটে ২৫টি নতুন উপকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সবকটি উপকেন্দ্রই যৌথভাবে নির্মাণ করবে টিএসটিএল ও ইইএল। 

তিনি জানান, প্রকল্পের প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-১-এর আওতায় মেহেরপুরে নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা; প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-২-এর আওতায় কুষ্টিয়ায় নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১৩৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪৩ হাজার টাকা;প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৩-এর আওতায় যশোরে নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা; প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৪-এর আওতায় ঝিনাইদহে নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং প্যাকেজ নং কেডি-ডব্লিউ-৫-এর আওতায় খুলনায় নতুন ৫টি উপকেন্দ্র নির্মাণের পূর্ত কাজে ব্যয় হবে ১১৩ কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৯৮৮ টাকা।

সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কানাডা, কাতার, সৌদি আরব ও কাফকো থেকে সার কেনার পাঁচটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে কানাডার কানাডিয়ান কমার্শিয়াল কর্পোরেশন থেকে ৪০ হাজার টন এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১২৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৮৫ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩২৭ দশমিক ৭৫ মার্কিন ডলার। 

সৗদি আরবের মা’এডেন থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২২৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ৫১৯ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৫৫৪ মার্কিন ডলার।কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯২ কোটি ২৯ লাখ ১১ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৭৯ দশমিক ৬৭ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ২৮২ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার।সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৯১ কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৭৬ দশমিক ১৭ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ২৮৮ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার।

এছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ৯৫ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৮৯ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার। যা আগে ছিল ৩৬৬ দশমিক ৩৭৫ মার্কিন ডলার।

সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন মসুর ডাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ধরা হয়েছে ১০১ টাকা ৯৪ পয়সা। ইজি জেনারেল ট্রেডিং  থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন এবং নাবিল নাবা ফুড প্রোডাক্ট থেকে ৪ হাজার মেট্রিক টন ডাল কেনা হবে।

তিনি জানান, বৈঠকে সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে ‘জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, লালমনিরহাট এবং দিনাজপুরে ৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ সংক্রান্ত পূর্ত কাজ সম্পাদনে ঠিকাদার নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্যাকেজের আওতায় জয়পুরহাট (১৫ হাজার মে.টন), সিরাজগঞ্জ (২০ হাজার মে.টন), লালমনিরহাট (১০ হাজার মে.টন) এবং দিনাজপুরে (২০ হাজার মে.টন) এই ৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ করা হবে। দুটি লটে এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। দুটি লটেই (লট-১ ও ২) একটি মাত্র প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে এবং তা কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে যৌথভাবেÑ এমএসসিএল এবং এমএসডিবিএল। এতে ব্যয় হবে  ২৬৬ কোটি ৬৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। 

সমন্বয় ও সংস্কার সচিব জানান, বৈঠকে ঘাড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্র্টিলাইজার প্রকল্পের হাউজিং কলোনি ও অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ সংক্রান্ত পূর্ত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম জামাল অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪২ হাজার টাকা।

তিনি জানান, এছাড়া বৈঠকে স্থানীয় সরকার বিভাগের চারটি প্রকল্পে এবং রেলওয়ের একটি প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধিও পৃথক পাঁচটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের চার প্রকল্পে ৫৬ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা রেলওয়ের এক প্রকল্পে ১৭৭ কোটি ৪৮ লাখ ১২ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ছে। 

news