ইলিশের প্রজনন ও জীবনচক্র মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকির মুখে পড়েছে দেশের ইলিশ সম্পদ। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ইলিশের উৎপাদনে, যা গত ৫ বছরে ধারাবাহিকভাবে কমেছে। উৎপাদন কমার কারণে মাছটির দামও এখন স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মূলত দুটি কারণে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে।
প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা: অভিবাসন রুটে বাধা, প্রতিকূল আবহাওয়া, নদীর নাব্যতা হ্রাস এবং দূষণ।

 অবৈধ ট্রলিং, জাটকা ও মা ইলিশ ধরা, এবং অবৈধ জালের ব্যবহার।
বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ও মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) এই বিষয়গুলো চিহ্নিত করেছে।

ইলিশ উৎপাদন কমার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে সম্প্রতি সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৫ বছরে ইলিশ আহরণ প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। ২০২০-২১ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত ইলিশ আহরণ ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে।

ফরিদা আখতার বলেন, “চলতি বছরের জুনে সারা দেশের ইলিশ জাটকা আহরণের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর আশা করা হয়েছিল বাজারে ইলিশের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই ও আগস্টে ইলিশ আহরণ ২০২৪ সালের তুলনায় যথাক্রমে ৩৩.২০% এবং ৪৭.৩১% কম হয়েছে। এই দুই মাসে মোট আহরণ হয়েছে ৩৫,৯৯৩.৫০ মেট্রিক টন, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২২,৯৪১.৭৮ মেট্রিক টন কম। শতাংশের হিসেবে কমেছে ৩৮.৯৩%।”

বৈজ্ঞানিক ও প্রশাসনিক উভয়ই সতর্ক করে দিচ্ছেন, ইলিশের উৎপাদন কমার এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশের জাতীয় মাছ সম্পদ ও অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব পড়তে পারে।

 

news