মণিপুরে নতুন সংঘর্ষে আরো ৪ জন হতাহত

ভারতের মণিপুর রাজ্যে নতুন করে আবারো সহিংসতা দেখা দিয়েছে। বুধবার বিষ্ণুপুর জেলায় তিনটি স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হন। এর আগে একই জেলায় গত মঙ্গলবার গভীররাতে সশস্ত্র ব্যক্তিদের গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত এবং আরো দুই জন আহত হয়েছেন।

সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এক দল ‘দুর্বৃত্ত’ ত্রংলাওবি গ্রামে কিছু পরিত্যক্ত বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। এসব বাড়ি দুটি জেলার সীমান্তে অবস্থিত। নিহত ও আহত ব্যক্তি সাম্প্রতিক সহিংসতার সময় চূড়াচাঁদপুরে তাদের গ্রাম থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন। তারা বিষ্ণুপুরের ময়রাং অঞ্চলের ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

মণিপুরে গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জাতিগত সহিংসতা চলছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ি, এসব সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত এবং ৩৬ হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যদিও স্থানীয়দের মতে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি।

প্রসঙ্গগত, সম্প্রতি মেইতেই সম্প্রদায় তফসিলি আদিবাসী হিসেবে সংরক্ষণ পেতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মণিপুর হাইকোর্ট। এরপরই বিক্ষোভ ও ভয়াবহ দাঙ্গা শুরু হয় রাজ্যটিতে। নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় আরো কয়েকটি অঞ্চলে আবারো কারফিউ জারি এবং এর সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। মণিপুর রাজ্যের কেন্দ্রে বিষ্ণুপুর জেলায় অনুপজাতি (উপজাতি শ্রেণিভুক্ত নয়, এমন সম্প্রদায়) মেইতেই সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। অপরদিকে, বিষ্ণুপুরের পাশের জেলা চূড়াচাঁদপুরে উপজাতিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বুধবার রাতে রাজধানী ইম্ফালের পশ্চিমে কাদাংবান্দ এলাকায় এ সহিংসতা দেখা দেয়। কড়া নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও সেখানে অন্তত তিনটি সহিংস ঘটনা ঘটেছে।

মনিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং বলেন, রাত দেড়টার দিকে সিংদা কাদাংবান্দের পাহাড়ে গুলি চালায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী। সহিংসতার প্রতিবাদে মেইতেই সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বুধবার দুপুরে বিক্ষোভ করা হয়। ওই সময় সড়ক অবরোধ করে চূড়াচাঁদপুরগামী সেনা কনভয় আটকে দেন তারা।

এদিকে, নতুন করে বড় সংঘাতের আশঙ্কায় মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং আরো ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছেন।

মণিপুরে সহিংসতা থামাতে এবং শান্তি ফেরাতে বুধবার দিল্লিতে কুকি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের বুদ্ধিজীবীরা একটি বৈঠক করেছেন। এ সময় শান্তি ফেরানোর ওপর জোর দেওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষ একমত হন।

এনবিএস/ওডে/সি

news