বিশ্বখ্যাত মার্কিন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক জন মের্শাইমার যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি পুনর্গঠনে বাধা হিসেবে তেল আবিব ও ইসরায়েলি লবির প্রভাবের কথা উন্মোচন করেছেন। পার্সটুডের প্রতিবেদনে মের্শাইমার বলেন, ইসরায়েল ও তাদের শক্তিশালী মার্কিন লবি এমন চাপে রেখেছে ওয়াশিংটনকে, যার কারণে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি নিয়ে কোনো সম্ভাব্য চুক্তি অচল হয়ে পড়েছে।

মের্শাইমার ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির সমালোচনা করে বলেন, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় মার্কিন প্রশাসন নীরব থাকায় এবং ইউক্রেন যুদ্ধেও যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ কৌশল গ্রহণ করছে। তিনি উল্লেখ করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের একসময় ইরানের সঙ্গে নমনীয়তার সংকেত দিয়েছিল, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টিভ হুইটেকার সীমিত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি মেনে নিয়েছিলেন। তবে ইসরায়েল ও মার্কিন নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের চাপে তাকে সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে হয়।

মের্শাইমার বলেন, "ট্রাম্প এবং হুইটেকারের ওপর এমন চাপ ছিল যে, কোনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধি গ্রহণযোগ্য নয়," যা আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার চেয়ে ইসরায়েলের স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার প্রতিফলন। তিনি দাবি করেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচির অধিকার রয়েছে।

তিনি ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর মধ্যকার পার্থক্যকে “বহুতটা নাটকীয়” উল্লেখ করে বলেন, বাস্তবে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের স্বার্থ বজায় রেখে একই নীতি অনুসরণ করছেন। মের্শাইমার গাজায় ইসরায়েলের কুখ্যাত গণহত্যাকে “পরিকল্পিত” এবং মানবিক সাহায্য সীমিত করার মাধ্যমে জনগণকে অপুষ্টির দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রক্রিয়া আখ্যায়িত করেছেন।

তিনি সতর্ক করেছেন, ইসরায়েলের নীতির বিরুদ্ধে দেশটির জনগণের মধ্যে কোনো অর্থবহ প্রতিবাদ নেই, যা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতীক এবং ইতিহাসের ভয়ঙ্কর অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি হতে পারে।

news