থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা এখন সংকটের মুখে। ক্যাম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে তার গোপন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ায় রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এই ফাঁস হওয়া কথোপকথনের জেরে তার জোট সরকার ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে, আর পদত্যাগের দাবি তীব্র হচ্ছে।

ফোনালাপে পায়েতংতার্ন হুন সেনকে 'আঙ্কেল' সম্বোধন করে কূটনৈতিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এছাড়া, থাইল্যান্ডের এক সামরিক কমান্ডারকে অপসারণের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি। এই কথোপকথন জনসমক্ষে আসার পর থাই রাজনীতিতে ধস নামে। ক্ষমতাসীন জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিক ভূমজাইথাই পার্টি বেরিয়ে যায়, যা সরকারের জন্য বড় ধাক্কা।

গত মাসে থাইল্যান্ড-ক্যাম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘর্ষে এক ক্যাম্বোডিয়ান সেনা নিহত হন। উত্তেজনা কমানোর জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত থাই সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে পায়েতংতার্নের সমালোচনা ফোনালাপে শোনা যায়। তিনি বলেন, "ওই কমান্ডার শুধু নিজেকে শান্ত দেখাতে চেয়েছিলেন, যা কোনো কাজে আসেনি।" এতে থাই সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়।

পরে পায়েতংতার্ন ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দেন: "ক্যাম্বোডিয়ান নেতার সঙ্গে আমার আলোচনা ফাঁস হওয়ায় জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, এ জন্য আমি দুঃখিত।" তবে তিনি দাবি করেন, এটি কূটনৈতিক কৌশলের অংশ ছিল। কিন্তু বিরোধীরা বলছেন, এতে দেশের সম্মান ও সেনাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

হুন সেন জানিয়েছেন, তিনি এই কথোপকথন ৮০ জন রাজনীতিবিদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলেন। পরে তার ফেসবুক পেজে সম্পূর্ণ ১৭ মিনিটের অডিও প্রকাশ করেন।

মাত্র ১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পায়েতংতার্ন। থাইল্যান্ডের ইতিহাসে তিনি সর্বকনিষ্ঠ এবং দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা, যিনি বিতর্কিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং হুন সেনের ঘনিষ্ঠ। এই সম্পর্কও বর্তমান সংকটে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এখন প্রশ্ন, ফোনালাপ ফাঁসের এই রাজনৈতিক ঝড় সামলাতে পারবেন কি পায়েতংতার্ন? নাকি পদত্যাগই হতে হবে তার শেষ পথ? থাইল্যান্ডের রাজনীতির গতিপথ এখন সবার নজরে।

news