যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার H-1B ভিসার জন্য ১ লাখ ডলার আবেদন ফি আরোপের জন্য একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন এই পদক্ষেপ নিয়েছে ভিসা প্রোগ্রামের অতিরিক্ত ব্যবহার রোধ এবং আমেরিকান কর্মীদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার জন্য।
ট্রাম্প ওভাল অফিস থেকে বলেছেন, “আমাদের দুর্দান্ত কর্মী প্রয়োজন, এবং এই ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যে এটি ঘটবে।” কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, এই পদক্ষেপ কোম্পানিগুলিকে আমেরিকান কর্মী নিয়োগে উৎসাহিত করবে এবং বিশেষায়িত ক্ষেত্রে উচ্চ দক্ষ বিদেশী কর্মী নিয়োগের পথও তৈরি করবে।
নতুন গোল্ড কার্ড প্রোগ্রাম
একটি পৃথক আদেশে ট্রাম্প “গোল্ড কার্ড” অভিবাসন পথও ঘোষণা করেছেন। এতে ১ মিলিয়ন ডলার প্রদানকারী বিদেশীরা দ্রুত ভিসা পাবে, এবং কোম্পানিগুলো দুই মিলিয়ন ডলার দিয়ে তাদের স্পনসর করা কর্মীদের প্রক্রিয়া দ্রুত করতে পারবে।
এই পদক্ষেপগুলো দেশে প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত বিদেশীদের ওপর নতুন সীমা আরোপের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। H-1B ভিসা মূলত তিন বছরের জন্য বৈধ এবং আরও তিন বছরের জন্য নবায়নযোগ্য। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, প্রোগ্রামটি মার্কিন কোম্পানিগুলিকে প্রতিযোগিতামূলক রাখে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
প্রশাসনের ব্যাখ্যা
বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলাপের পর প্রতি বছরে ১ লাখ ডলার ফি এবং যাচাই খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এখনো ঠিক করছি, তিন বছরের জন্য ৩ লাখ ডলার একবারে নেওয়া হবে নাকি বছরে ১ লাখ ডলার নেওয়া হবে।”
H-1B ভিসার ওপর ট্রাম্পের অবস্থান উঠানামা করেছে। তার প্রথম মেয়াদে বিদেশী কর্মী ভিসা সীমিত করা হয়েছিল, কিন্তু ২০২৪ সালের প্রচারণার সময় কিছু বিদেশী জন্মগ্রহণকারী কর্মীর ক্ষেত্রে আইনি মর্যাদা প্রদানের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
H-1B ভিসা ও মার্কিন শিল্প
প্রতি বছর ৬৫ হাজার H-1B ভিসা দেওয়া হয়, যার মধ্যে ২০ হাজার ভিসা সংরক্ষিত থাকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্নদের জন্য। চাহিদা সরবরাহের চেয়ে বেশি, তাই লটারি ব্যবস্থা চলে। বিশেষ করে টেকনোলজি শিল্প H-1B ভিসার ওপর নির্ভরশীল, কারণ দক্ষ প্রতিভা ঘরে পাওয়া যায় না।
ট্রাম্প এর আগে H-1B ভিসার বিরোধিতা করেছিলেন যাতে মার্কিন কোম্পানিগুলো আমেরিকান শ্রমকে অগ্রাধিকার দেয়। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি অভিযোগ করেছিলেন, কোম্পানিগুলো কম বেতনে আমেরিকান কর্মীদের প্রতিস্থাপনের জন্য H-1B ব্যবহার করছে।
বিদেশী উদ্যোক্তা ও উচ্চ আয়ের কর্মী
ট্রাম্প গোল্ড কার্ড প্রোগ্রামও চালু করেছেন, যা উদ্যোক্তা ও উচ্চ আয়ের বিদেশী কর্মীদের জন্য প্রবেশের গতি বৃদ্ধি করবে। লুটনিক বলেন, “আমরা কেবলমাত্র অসাধারণ ব্যক্তিদের একেবারে শীর্ষে নেব।”
এই পদক্ষেপের ফলে H-1B কর্মীদের ওপর নির্ভর শিল্প ও প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর ওপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে প্রশাসনের উদ্দেশ্য মার্কিন বাজারে প্রতিভাবান ও অভিজ্ঞ বিদেশী কর্মী প্রবেশ নিশ্চিত করা।


