কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন, ক্যারিবিয়ান সাগরে মাদক পাচারকারী নৌকাগুলিতে মার্কিন হামলা আসলে “অত্যাচারের কাজ”। তিনি বলেন, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে এই হামলায় কলম্বিয়ার নাগরিকরা নিহত হয়েছেন, তাহলে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিমান হামলার নির্দেশ দেন ফেন্টানাইলসহ বিভিন্ন অবৈধ মাদকের প্রবাহ ঠেকাতে। এখন পর্যন্ত এসব অভিযানে ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তবে আইন বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, এ ধরনের হামলা কি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন নয়?
পেট্রোর ভাষায়, “যদি শুধু নৌকাটা থামিয়ে ক্রুদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়, তাহলে ক্ষেপণাস্ত্র কেন ছোড়া হলো? একেই খুন বলা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন সংস্থাগুলোর সঙ্গে কোকেন জব্দে সহযোগিতা করছি, কিন্তু আগে কেউ মারা যায়নি। এই হত্যাকাণ্ডের কোনো প্রয়োজন ছিল না।”

মার্কিন প্রশাসনের দাবি, এসব হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ভেনেজুয়েলার গ্যাং। তবে নিহতদের পরিচয় এবং প্রথম আক্রমণ করা নৌকার বিষয়ে তাদের রিপোর্ট নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এটিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলছেন।

হোয়াইট হাউস অবশ্য ভিন্ন সুরে বলেছে, ট্রাম্প আমেরিকায় মাদকের স্রোত বন্ধ করতে সব ধরনের শক্তি ব্যবহার করতে প্রস্তুত

জাতিসংঘের বার্ষিক বৈঠকের সময় নিউইয়র্কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট পেট্রো ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন,
“আমাদের মতো দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো আর কোনো রাজার কাছে মাথা নত করবে না।”

জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ট্রাম্প ল্যাটিন আমেরিকার প্রতি তার নীতি আরও কঠোর করেছেন। তিনি অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছেন এবং মেক্সিকো ও ভেনেজুয়েলার কয়েকটি বড় মাদকচক্রকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছেন।

মার্কিন সামরিক বাহিনীও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দক্ষিণ ক্যারিবিয়ানে তাদের উপস্থিতি জোরদার করেছে, অতিরিক্ত জাহাজ ও হাজারো সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে।

পেট্রো বারবার ট্রাম্পের সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তবে তিনি পাল্টা দাবি করেছেন, কলম্বিয়া নয়, বরং ট্রাম্পের বিদেশনীতি আসলে যুক্তরাষ্ট্রকেই বিশ্বে আরও বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে

news