গাজার উদ্দেশ্যে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা আবারও বাধার মুখে। ইসরায়েলি বাহিনী সাগরে আটকে দিয়েছে বহরের অন্তত ১৩টি নৌযান, আর আটক করেছে ৩৭ দেশের ২০১ জন অধিকারকর্মীকে।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে স্পেনের ৩০ জন, ইতালির ২২ জন, তুরস্কের ২১ জন ও মালয়েশিয়ার ১২ জনসহ মোট ২০১ জনের বেশি মানুষ ছিলেন।
সাইফ লিখেছেন, আটক হলেও অভিযানের গতি থেমে যায়নি। তিনি বলেন, “আমাদের প্রায় ৩০টি নৌযান এখনো দখলদার বাহিনীর সামরিক জাহাজ এড়িয়ে গাজার উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, অনুপ্রাণিত, এবং অবরোধ ভাঙার জন্য লড়াই করছে।”
বুধবার রাতে, গাজা থেকে প্রায় ১২৯ কিলোমিটার দূরে ভূমধ্যসাগরে ফ্লোটিলায় বাধা দেয় ইসরায়েলি নৌবাহিনী। অন্তত আটটি নৌকা থামিয়ে দেওয়া হয়— দেইর ইয়াসিন, হিউগা, স্পেক্টার, আদারা, আলমা, সিরিয়াস, আরোরা ও গ্রান্ডি ব্লু। তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩টি নৌযান থামানো হয়েছে।
সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো, আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বখ্যাত সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “হামাস-সুমুদ ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌযান নিরাপদে থামানো হয়েছে। আরোহীদের ইসরায়েলের বন্দরে নেওয়া হচ্ছে। গ্রেটা ও তার সঙ্গীরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।”
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা হলো সমুদ্রপথে গাজায় মানবিক ত্রাণ পাঠানোর একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ। এই বিশাল বহরে রয়েছে ৪০টির বেশি নৌযান এবং প্রায় ৫০০ জন যাত্রী, যাদের মধ্যে রয়েছেন অধিকারকর্মী, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাংবাদিক এমনকি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত সদস্যও।
প্রথম বহরটি যাত্রা শুরু করে গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে। পরে তিউনিসিয়া, ইতালির সিসিলি দ্বীপ এবং গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে আরও কয়েকটি নৌযান যুক্ত হয়।
এবারের এই অভিযান বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করেছে, কারণ এর লক্ষ্য স্পষ্ট—গাজার মানুষের কাছে সরাসরি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া এবং ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের অবরোধ চ্যালেঞ্জ করা।


