আমেরিকায় ফেডারেল সরকারের চাকরি থেকে একসাথে দেড় লাখেরও বেশি কর্মচারী পদত্যাগ করেছেন। প্রায় ৮০ বছরের মধ্যে একক বছরে এত বড় গণপদত্যাগের ঘটনা এটাই প্রথম বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

চলতি সপ্তাহে শুরু হওয়া এই গণপদত্যাগকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল প্রশাসনের জন্য “দক্ষতা হারানোর বড় আঘাত”। শ্রমিক সংঘ সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত জনবল হারানোতে সরকার পরিচালনায় গুরুতর প্রভাব পড়বে।

রিপোর্টে জানানো হয়, সেপ্টেম্বর নাগাদ বেতন নিশ্চিত করে আগেই চাকরি ছাড়ার কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন এই কর্মীরা। মঙ্গলবার থেকে তাদের আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ কার্যকর হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনায় এই কর্মী সংকোচন প্রক্রিয়া ছিল আগে থেকেই। কর্মীদের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দিয়ে স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়তে বলা হয়েছিল। তবে যারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তাদের চাকরিচ্যুতির হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।

ফেডারেল সরকারের এইচআর অফিস জানিয়েছে, অনেক কর্মী তাদের সংস্থা কয়েক মাস আগেই ছেড়ে গেছেন। যদিও কাগজে-কলমে তখনও তারা বৈতনিক ছুটিতে ছিলেন।

এই ব্যাপক প্রস্থানের প্রভাব নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ফোর্ড স্কুল অব পাবলিক পলিসির অধ্যাপক ডন ময়নিহান বলেন, সবচেয়ে বড় ক্ষতি হচ্ছে অভিজ্ঞ সরকারি কর্মীদের জ্ঞান ও দক্ষতা হারানো। তার ভাষায়, “সরকারি কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে চালাতে বছরের পর বছর অভিজ্ঞতা লাগে। এখন সেই অভিজ্ঞ কর্মীদের বড় অংশ অন্যত্র চলে যাচ্ছেন, যা সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়।”

রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমান ও প্রাক্তন সরকারি কর্মী এবং শ্রমিক সংঘ সংশ্লিষ্টদের মতে, এই দক্ষতার ঘাটতি অনেক ফেডারেল দপ্তরের দৈনন্দিন কাজকর্ম এবং আমেরিকান জনগণকে সেবা দেওয়া আরও কঠিন করে তুলবে।

এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—আমেরিকান প্রশাসন কি এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবে, নাকি এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হয়ে পড়বে?

 

news